google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

এগার সিন্ধু

ফেরিওয়ালাঃ এগারো সিন্ধু মুলত একটি দূর্গের নাম। এটি মোঘল আমলের একটি প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর থেকে আট কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। ইতিহাস অনুযায়ী, একসময় বারো ভূঁইয়া সম্রাট ঈসা খাঁ মোঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এই দুর্গ ব্যবহার করেছিলেন। মোঘল সম্রাট জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ আকবর বাংলা জয়ের সংকল্প করলে তার বিজ্ঞ সেনাপতি মানসিংহ এগার সিন্ধু দূর্গ আক্রমন করেন। ইতিহাসের সাক্ষ্য বহনকারী দুর্গটির অস্তিত্ব অযত্ন অবহেলার ফলে অনেক আগেই বিলীন হয়ে মাটির ঢিবিতে রূপ নিয়েছে। এই ঢিবি খননকালে অনেক প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনের সাথে পাওয়া গেছে ‘ধাপযুক্ত স্থাপনা’। যা এই দেশের স্থাপত্য শিল্পের আরেকটি উজ্জ্বল ও অনন্য ইতিহাস। এমন ধাপযুক্ত স্থাপনাকে বাংলাদেশের প্রাচীন স্থাপত্য সংস্কৃতির ইতিহাসের বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রত্নতত্ববিদগন। তাঁরা বলছেন, বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসে মিসরের পিরামিডে প্রথম ধাপ যুক্ত নকশার দৃষ্টান্ত দেখা যায়। এগারসিন্দুর দুর্গে যে ধাপযুক্ত স্থাপনার সন্ধান মিলেছে সেটি বাংলার ইতিহাসের প্রাক্‌ মুসলিম (১২০৪ সালের আগের সময়) স্থাপত্য কাঠামোর স্বতন্ত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হিসেবে পরিগনিত হচ্ছে। দুর্গ সন্ধান করে মিলেছে তোপ মঞ্চ। ধারণা করা হচ্ছে ঈসা খাঁর সৈনিকেরা এটি ব্যবহার করে কামান থেকে গোলা ছুড়তেন। তোপ মঞ্চটি সমতল থেকে ৯ মিটার উচ্চতায়।

এগারসিন্ধুর দুর্গ খননের তৃতীয় ধাপের কাজ সমাপ্ত। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ওই বিরল স্থাপনার সন্ধান পাওয়ার তথ্য সবার সামনে আনেন। এগারসিন্ধুর দুর্গ ঈদগাহ ময়দানে এখন পর্যন্ত ২৫০টির মতো প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে। এর মধ্যে প্রাচীন সময়ের চীনা মাটির পাত্র, পাথর খণ্ড, জীবাশ্ম, লৌহপিণ্ড, কালো চকচকে প্রলেপযুক্ত মৃৎপাত্র, লাল চকচকে প্রলেপযুক্ত মৃৎপাত্র, জীবজন্তুর হাড়, ছাই, কয়লা ইত্যাদি। বাংলার উত্থান-পতনের ইতিহাসে ঈসা খাঁর জীবনসংগ্রামের গুরুত্ব অনেক। এগারসিন্ধুর এলাকায় ঈসা খাঁর শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটি ছিল। যা শাহ গরীবুল্লাহর মাজার নামে পরিচিত। এই এলাকায় তৎকালীন সময়ের দুটি মসজিদ রয়েছে। ধাপ যুক্ত স্থাপনায় সাতটি ধাপ রয়েছে প্রতি ধাপের উচ্চতা তিন মিটার যা ভদ্র নকশা খচিত। সৌজন্যে প্রথম আলো।