google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

বিশ্বশান্তি স্থাপনে শব্দহীন পৃথিবী প্রয়োজন

সমগ্র বিশ্বব্যাপী আজ শান্তির আয়োজন। আর এই শান্তি রক্ষার্থে সামরিক প্রতিযোগিতা অস্ত্রের ঝনঝনানী মানবতা লংঘন কত কিছুই না করা হচ্ছে অথচ শান্তির শুভাগমন ঘটেনা। কিন্তু কেনই বা ঘটেনা প্রশস্ত রাজপথ বিলাসবহুল নৌপথ দ্রুতগতির আকাশপথ তবুও শান্তি আসেনা কেন আসেনা? আসলে শান্তি অর্জনের জন্য যেটা দরকার সেটা কেউ করেনা। শান্তি আনার জন্য দরকার শান্তিকামী মানুষের মৌনতা। শান্তির জন্য দরকার নীরবতা। কিন্তু আমরা কি কখনো নীরব থাকি? শান্তি এমন এক অবস্তুগত কিন্তু কিন্তু এবং অতি আবশ্যকীয় উপাদান যাকে কেন্দ্র করে বুদ্ধিদীপ্ত প্রাণীর জীবন আবর্তিত হয়। আর এই শান্তি অদৃশ্যগত উপাদান হলেও শান্তির কিছু নিয়ামক আছে যেটা ছাড়া আসলে শান্তি পূর্ণতা পায়না বা শান্তি শান্তি রুপে গণ্য হয়না। শান্তির সাধারণ কিছু নিয়ামক হলো উজ্জ্বল রোদ্রে ঝিরঝিরে বাতাস পাখির কলকাকলি অযান্ত্রিক শব্দ বা প্রকৃতির মুখরতা। শান্তি হলো সবুজ মাঠে জুড়িয়ে যাওয়া আখি। এখন যারা শান্তি নিয়ে গবেষণা করেন বা শান্তি অন্বেষণ করেণ তারা কিন্তু বট বা পাইকড় গাছ রোপন করেননা। খাদ্যাভ্যাস এ নিরামিষ ভোজী হননা। তবে শান্তি কেন আসবে। শান্তি হলো এমন একটা উপযুক্ততা যেখানে কৃত্রিমতার স্থান নেই। প্রকৃতিকে উজাড় করে বা প্রকৃতির স্বাভাবিক আইন বা শৃংখলা ভেংগে দিয়ে শান্তির উপাসনা করা নিরেট বোকার কর্ম। শান্তির জন্য জেট বিমানের বিকট শব্দ বোমা বিষ্ফোরনের প্রাণ কাপানো আর্তনাদ মানুষের বুকফাটা হাহাকার শান্তি আনতে পারেনা। শান্তি পেতে হলে আগে অন্তরাত্মার কাপুরুষতা দূর করতে হবে। অন্তরাত্মা যদি ভয়ে কেপে উঠে তবে নিজের অস্ফুট স্বরে যে গোংগানী বা শব্দ বের হয়ে আসে তা শতক্রোশ দূরে হয়ত বিকট শব্দ হয়ে শান্তি বিঘ্নিত করে। অর্থাৎ আপনি যত কৃত্রিম শব্দ তৈরী করবেন তত অশান্তির বীজ রোপন করলেন। আর এই বোপিত বীজ অংকুরিত হয়ে ধীরেধীরে আপনার সামগ্রিক শান্তিকে বিঘ্নিত করবে। একটা সময় মুনি ঋষি বা মহাজ্ঞ্যনীরা একাকীত্ব গ্রহণ করতেন বা সন্যাস যাত্রা করতেন বা ধ্যান করতেন কারণ হলো অপ্রয়োজনীয় শব্দ উৎপন্ন করা থেকে বিরত থাকা। এই বিরত থাকার প্রক্রিয়া তাদের চারিপাশকে এতই শান্তিময় করে তুলেছিল যে তারা সৃষ্টিকর্তার আহবান উপলব্ধি করতে পারতেন। আজ আর মানুষের কানে সৃষ্টিকর্তার আহবান পৌছায়না। কারণ মানুষ শান্তিতে নেই। শান্তি প্রক্রিয়ায় যে কার্যকর ভূমিকা নেওয়া দরকার তা হলো মৌনতা অর্জন করা এবং করানো যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে শান্তি অর্জন করা যায়না বর্তমান বিশ্বের সার্বিক বিশ্লেষণ সেটারই ইংগিত বহন করে। অধুনা সমাজ ব্যবস্থায় অশান্তির মূল কারণ অসংযত শব্দের উৎপত্তি। আগের যুগে মানুষ সংগীত শুনত এমন সংগীত যেটা মানুষের মনকে শান্ত করত। মানুষ এখনো সংগীত শোনে কিন্তু সংগীতের আর সেই সংযত করার ক্ষমতা নেই যা মানুষের মনকে শান্ত করতে পারে। বরং মনকে আরো বিক্ষিপ্ত করে যা শান্ত করার বিপরীত। যখন কোন দেশ শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে অন্য আরেকটি দেশের উপর আগ্রাসন চালায় তাতে কি লাভ হয় শত শত জীবনহানী গুলি ও বোমার বিকট শব্দ। পরাজিত পক্ষের আত্মঘাতী হামলা, প্রতিশোধ পরায়ন মনোবৃত্তি মানুষকে আরো হিংস্র করে তোলে ফলে দেখা যায় কর্তৃত্ব প্রমানে বা নিজেদের ক্ষমতা প্রমানে তারা সামাজিক প্রতিষ্ঠান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সহ মানুষের অতি প্রয়োজনীয় ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গুলোর উপর হামলা করে অথচ সে জায়গাগুলো নিরাপদ, আস্থা এবং শান্তির প্রতীক হিসাবে পরিচিত ছিল। অথচ যদি আগ্রাসনকারী শব্দযন্ত্রনা সৃষ্টি করতে যে পরিমান বিনিয়োগ করে তার চেয়ে অনেক কম পরিমানে সংশ্লিষ্ট দেশে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করে সুশিক্ষা ও সঠিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারত তবে শান্তি প্রতিষ্ঠা সহজ ও কার্যকর হতো। হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতনা বরং শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যেত। শব্দযন্ত্রনা মানুষের মনকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলে ফলে মানুষ নিরাপত্তার অভাব বোধ করে। এবং আত্মরক্ষার্থে অস্থিরতা অনুভব করে ফলে শান্তি দূরে সরে যায়। যেমন হঠাৎ করে কারো কানের কাছে চিৎকার করলে মানুষ ভয় পেয়ে চমকে উঠে। শুধু মানুষই নয় প্রাণিজগৎ এর প্রতিটি প্রানীরই শান্তি বিঘ্নিত হয় শব্দের কারনে। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার মুল উপায় হলো শব্দ নিয়ন্ত্রণ করা পারত পক্ষে শব্দ উৎপন্ন না করা সেটা যে কোন ধরেনের শব্দই হোকনা কেন। শক্তির কোন বিনাশ নেই শক্তি একরুপ থেকে আর এক রুপে রুপান্তরিত হয়। শব্দ যেহেতু একধরণের শক্তি তাই উৎপন্ন হওয়া শব্দও একধরণের শক্তি হয়ত নিদৃষ্ট শব্দ একসময় আমরা শুনতে আর পাইনা তাই বলেকি শব্দটি শেষ হয়ে গেল? না তা শেষ হয়ে যায়না বরং বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ঘুরে বেড়ায় কিন্তু শব্দের শক্তি মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বাধা অতিক্রম করতে পারেনা। যেহেতু মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সংশ্লিষ্ট শব্দ শক্তির চেয়ে বেশি তাই শব্দশক্তি মাধ্যাকর্ষণ সীমা অতিক্রম করতে পারেনা ফলে বায়ুমন্ডলেই আবর্তিত হয়। এবং এই আবর্তন কালে শব্দের শক্তি শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী উপাদানের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কনাগুলো ধংস করে ফেলে। যার ফলে বায়ুমণ্ডলে অবস্থানকারী বা আবর্তনকারী জীবের মনে শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী উপাদান কমে যায় এবং অশান্তি সৃষ্টিকারী উপাদানের অনুপাত বৃদ্ধিপায় যা অতি সহজে মানুষের মনকে বিক্ষিপ্ত করে তোলে এবং শান্তি অর্জনের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়।