google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

টেরাকোটা

ফেরিওয়ালাঃ 
                  টেরাকোটা একটি ল্যাটিন শব্দ: 'টেরা' অর্থ মাটি, আর 'কোটা' অর্থ পোড়ানো। মানুষের ব্যবহার্য পোড়ামাটির তৈরি সকল রকমের দ্রব্য টেরাকোটা নামে পরিচিত। আঠালো মাটির সঙ্গে খড়কুটো, তুষ প্রভৃতি মিশিয়ে কাদামাটি প্রস্তুত করা হয়। সেই মাটি থেকে মূর্তি, দৃশ্যাবলি তৈরি করে রোদে শুকিয়ে আগুনে পুড়িয়ে টেরাকোটা ভাস্কর্য তৈরি করা হয়। মানবসভ্যতার বিকাশকাল হতে পোড়ামাটির ভাস্কর্যের ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। সুমেরীয় সভ্যতা, ব্যাবীলনীয় সভ্যতা, মায়া সভ্যতায় এই শিল্পের প্রচলন ছিল।পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে মৌর্য সাম্রাজ্য, গুপ্ত সাম্রাজ্য-এর বহু টেরাকোটার নিদর্শন পাওয়া গেছে।পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহর টেরাকোটা শিল্পের জন্য বিখ্যাত।  ইতিহাস থেকে জানা যায়  ভারতবর্ষের সিন্ধু নদীর তীরে খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ বৎসর বা তার আগে বিকশিত সিন্ধু সভ্যতায় প্রচুর টেরাকোটার নিদর্শন পাওয়া গেছে। এই সব নিদর্শেনের মধ্যে রয়েছে নানা ধরনের পাত্র, দেবদেবীর মূর্তি, স্বস্তিকা চিহ্ন ইত্যাদি। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫০ অব্দের দিকে বাংলাদেশের উয়ারী-বটেশ্বর অঞ্চলে বিকশিত সভ্যতায় এই জাতীয় নমুনা পাওয়া গেছে। এই বিচারে বলা হয়, বহু আগে থেকেই বাংলাদেশের শিল্পীরা টেরাকোটা তৈরির কৌশল শিখেছিলেন। চতুর্দশ শতাব্দীর প্রাক কালে ইউরোপ এবং কলম্বিয়ান জনগোষ্ঠীর কাছে টেরাকোটা শুধু মাত্র সিরামিক হিসাবেই পরিচিত ছিল। প্রাচীনকালে এই পদ্ধতিতে নানাধরনের পাত্র, তাবিজ, ইট তৈরি করা হতো। যখন মহেঞ্জোদারোর (খৃষ্ট-পূর্ব ৩০০০-১৫০০) নগর-বসতি আবিষ্কৃত হয়,তখন ওখান থেকে কিছু পোড়া মাটির নারী দেহ ফলক খুঁজে পান খননকারীরা !দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দিরে পুঠিয়ার গোবিন্দ মন্দির পাহাড় পুর বৌদ্ধ বিহার সহ অনেক প্রাচীন স্থাপনায় টেরাকোটার অসংখ্য নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। বাংলাদেশের মন্দিরের গাত্র অলঙ্করণের জন্য একসময় টেরাকোটা অপরিহার্য উপকরণ ছিল। একই সূত্র ধরে মসজিদেও টেরাকোটা ব্যবহৃত হয়েছে। এর প্রস্তুত প্রনালী সম্পাদনায় প্রথমে কাদা দিয়ে কোনো অবয়ব তৈরি করা হয় তারপর রৌদ্রে শুকানো হয় এবং পরে তা আগুনে পুড়িয়ে মজবুত করা হয়। এই পদ্ধতিতে মাটির ফলকে কোনো শিল্পকর্ম উপস্থাপন করলে, তখন তাকে টেরাকোটা বলা হয়। মূলত টেরাকোটা সাংসরিক কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়। গৃহাদি অলঙ্করণ বা কোনো শৈল্পিক প্রদর্শনের জন্য টেরাকোটা তৈরি করা হয়। কিছু কুশলী শিল্পীরা টেরাকোটা তৈরি করে থাকেন। মসজিদ মন্দিরের গায়ে অলংকৃত টেরাকোটা দ্বারা অনেক ইতিহাসও বর্ণনা করা হয়েছে যার পাঠোদ্ধার করে লিপিবদ্ধ করা জরুরী।