google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

বাঙ্গালী কী

আসলে বাঙ্গালী হলো নৃতাত্বিক ও ভূতাত্ত্বিক সরলতা ও মানবিকগুনাবলী ও মূল্যবোধ সমৃদ্ধ একটি জাতির অবস্থান ভিত্তিক পরিচয়। বাংলা হলো উল্লিখিত জাতির ভাব বিনিময়ের মাধ্যম শুধু তা নয় বা এটি শুধু ভাষা বা একটি ভূখন্ড বা শুধু একটি জাতি নয়। এটি হলো একটি নৃগোষ্ঠীর বংশগত অবস্থান যা সংশ্লিষ্ট জাতির মানবীয় গূনাবলী, শিক্ষা দক্ষতা ভাবের আদানপ্রদান সহ একশব্দে প্রকাশিত সামগ্রিক পরিচয়। প্রকৃতি যেহেতূ শ্রেষ্ঠ শিক্ষক তাই এই ভূতাত্বিক অঞ্চলের মানুষগুলো স্বশিক্ষায় সুশিক্ষিত ছিল এবং সেই শিক্ষা তাদেরকে মানবীয় গুণাবলী অর্জনে যথেষ্ঠ সহায়ক ছিল। নির্মল পরিচ্ছন্ন প্রকৃতির কোলে বেড়ে উঠা মানুষগুলো ছিল প্রকৃতির মত উদার লোভলালসা ও জিঘাংসাহহীন ছিল এদের জীবনযাত্রা। সাদা সিধে জীবন এবং প্রকৃতির সরলতার মত স্নিগ্ধ জীবনযাত্রায় প্রবৃত্ত মানুষগুলোর অতিথি পরায়নতা ছিল মুগ্ধকর। সৎ জীবনযাপন এবং পরিশ্রমী মানষিকতা ছিল এদের সুস্থ সুন্দর জীবন ও সমৃদ্ধির মূল কারণ। হাজারো নদী অববাহিকায় পরিচ্ছন্ন গাত্রদাহন এবং নদীর উচ্ছলালতার মতই প্রানোচ্ছল ছিল এই নৃগোষ্ঠীর সুখী স্বাচ্ছন্দ্য জীবনধারা। নিয়ম মাফিক সহজ সরল জীবন যাপন এবং পরিশ্রম হেতু এই অঞ্চলের মানূষগুলো সুস্থ ও সুঠাম দেহের অধিকারী ছিল। তবুও তাদের আগ্রাসী মনোভাব ছিলনা ছিলনা বীরত্ব প্রদর্শনের হীন ইচ্ছা। প্রকৃতির কোলে প্রকৃতির সাথে লড়াই করে বেচে থাকা এই মানুষগুলোর সরলতার মূল হাতিয়ার ছিল এই অঞ্চলের আবহাওয়া। নাতিশীতোষ্ণমণ্ডলএর এই ভূখন্ডে স্নিগ্ধ আবহাওয়া এখানকার মানুষের মন মেজাজকে রুক্ষ হতে দেয়নি বরং আগলে রেখেছে গভীর মমতায়। বীরত্ব প্রদর্শনে ব্রত না থাকলেও আত্মরক্ষার্থে কঠোর মনোভাব পোষন করত এই অঞ্চলের মানুষ। আবহাওয়ার মতই শান্ত স্বভাব অর্জনকারী এই মানুষগুলোর  উদারতার মুল কারন উদার প্রকৃতি ঝর্নার বিশুদ্ধ জল বয়ে এনেছিল মনের স্বচ্ছতা, নদীর স্রোত এদের কে অর্জন করিয়েছে দূর্বার গতি, সবুজ প্রান্তর এনেদিয়েছিল অবুঝের মত সরল মানষিকতা, নির্মল বাতাস এদের চরিত্রকে দিয়েছিল নির্মল সততা পাখির কলকাকলি এদের করেছিল বিনোদন প্রেমি সুরেলা ও কোমল ভাষাজ্ঞ্যন সমৃদ্ধ, ফুলের সৌরভ এনে দিয়েছিল পবিত্র মন, মিষ্টি রোদ এনেদিয়েছিল উজ্জলতা, বৃষ্টির রিমঝিম শব্দ বয়ে এনে দিল নতুন সৃষ্টির উল্লাস, খোলা নীল আকাশ উড়িয়ে এনেছিল কবিত্ব, সূর্যস্নান শেখাল নীরোগ থাকার মন্ত্র, বটবৃক্ষের বয়ে অকৃত্রিম বন্ধন কর্দমাক্ত মাটি দিল রুপচর্চার উপায় গাছের ছায়া শিখিয়েছে প্রিয়জনকে  আগলে রাখার মানসিকতা। আর আজো সেকারনেই এই ভূন্ড বাংলা, ভাষা বাংলা আর আমরা বাংগালী। কত দেশের মানুষ এসে এখান থেকে মানবীয় গুণাবলী অর্জন করে নিয়ে গেছে নিজ দেশে। বলা যায় অধুনা বিশ্বে মানবীয় গুণাবলী রপ্তানী হতো এখান থেকে। অথচ আজ এই দেশেই মানবিক সংকট মানবীয় গুনাবলীর আকাল। পর্যাপ্ত পানি প্রবাহের কারনে এখানকার মাটিতে আয়োডিনের পরিমান ছিল কম বা শুন্য। তাইতো এইমাটিতে জীবিকা নির্বাহকারী মানুষগুলো ছিল কুটিল চিন্তা মুক্ত। সবদিক থেকে এগিয়ে থাকা মানুষগুলো শুধুমাত্র ডিপ্লোম্যাটিক বা কুটবুদ্ধির দিক থেকে ছিল যথেষ্ট পিছিয়ে। পক্ষান্তরে অধিক আয়োডিনভোগী মানুষগুলো অধিক কুটবুদ্ধি সম্পন্ন হওয়ায় তারা যখন এই অঞ্চলে আগমন করে এখানকার মানুষগুলো সরল ভাবেই তাদেরকে গ্রহণ করে কিন্তু আগত অতিথিরা কুটবুদ্ধি সম্পন্ন হওয়ায় তারা এই অঞ্চলের মানুষের সরলতাকে পুজি করে সখ্যতা গড়ে তোলে এবং এদেরকে নানারকম জটিল ভাবনায় মানষিক চাপ বাড়াতে থাকে। পরিবর্তিত হতে থাকে এখানকার মানুষের মানষিকতা। সামগ্রিকতা ছেড়ে মানুষ ব্যক্তিক লাভ লোকসানের দিকে ঝুকে পড়ে সরে যেতে থাকে সরলতার কক্ষপথ থেকে। বিভিন্ন জাতি বর্ণের মানুষের সংমিশ্রণ ও প্রভাবে আমরা হারাতে বসেছি আমাদের মূল পরিচয়। উজাড় হয়ে চলেছে আমাদের প্রকৃতি লুপ্ত হতে চলেছে আমাদের নৃতাত্ত্বিক তাৎপর্য। যেখান থেকে মানবীয়তা রপ্তানী হতো সেখানেই আজ মানবিক সংকট। আমদানি করা আধুনিকতায় রপ্তানি হয়ে গেছে আমাদের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ও শান্তি। বটবৃক্ষের ব নেই বলে আজ ছিড়ে যাচ্ছে আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন। ছায়াহীন রুক্ষ প্রকৃতিতে শিশু শিখছে কেউ কাউকে আগলে রাখেনা তাই হয়ত পিতামাতার ঠায় আজ বৃদ্ধাশ্রম অথবা রাস্তায়। যখন তোমার মাঝে নুন্যতম বংগালবোধ নেই তবে কেন নিজেকে বাংগালী দাবী কর? আজকে তুমি বা আমি যা তাকে আর যাই হোক নিজেকে বাংগালী পরিচয় দেওয়া যায়না।