google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

অকৃতজ্ঞ নদী

ফেরিওয়ালা নিবেদিতকবে যেন পড়েছিলাম বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশে অসংখ্য নদনদী জালের ন্যায় ছড়িয়ে আছে। অকৃতজ্ঞ এই নদীগুলোর কারনে  রবীন্দ্রনাথ, দার্শনিক লালনের মত ক্ষনজন্মা মানুষগুলো কুড়ে হয়ে গিয়েছিলেন সব কাজকর্ম ফেলে নদীপথে ঘুরে বেড়াতেন আর অযথা সৃষ্টি করতেন নানা গান কবিতা গল্প। কি বোকা তারা আর বোকা বলেই ভালবাসত নদীকে। আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি যুগের মানুষ আমাদের দরকার গতি নদীর দরকার নেই। তাইতো আমরা তৈরী করছি অপরিকল্পিত ব্রিজ, সেতু বাধ ইত্যাদি। এই অকর্মন্য নদী গুলো আর কিছু না করলেও আমাদের ড্রেনেজ ব্যবস্থার খরচ বাচিয়ে দিয়েছে অনেকটাই। যদিও এককালে সারাবছর প্রমত্তা থাকার কারনে ভাংগন কবলিত হয়েছে কত মানুষ, বিলিন হয়ে গেছে কত জনপদ অবশ্য আমরা তা অনেক অংশেই কমিয়ে ফেলেছি ওদেরকে মৌসুমী প্রকৃতির করে ফেলেছি। গাধার মত একসময় ভাবতাম আমাদের দেহের রক্ত সংবহনের মাধ্যমে জীবনের যে সুস্থতা বা প্রান সঞ্চার হয় এবং শিরা উপশিরাগুলো জালের মত যেমন ছড়িয়ে আছে ঠিক তেমনি নদীগুলোও এই দেশের প্রান সঞ্চারী। জীবনানন্দের ধানসিঁড়ি, রবীর ছোট নদী মধুসূদনের সতত মানিকের পদ্মা সবগুলোই কি সুন্দর ভাবে আমাদের ইতিহাসের পাতা বৃদ্ধি করছে তবুও কিছু বোকা এদের রক্ষার দাবী করে আর কিছু বুদ্ধিমান খননের নামে নিজের জীবন মান বৃদ্ধি করছে। বিশের বৃহত্তম বদ্বীপ নাকি নদীর সৃষ্টি। আরে বোকা নদী তোরা এই ব্দ্বীপ গঠন না করলে কি সুন্দর আমরা ইউরোপের মত উন্নত বা মধ্যপ্রাচ্যের মত ক্ষণিজ সমৃদ্ধ দেশে জন্ম নিতাম। আমাদের সেই সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত করে এই গাধারা শত শত বছরের পলি জমিয়ে গড়ে তুলেছে এই দেশ। তার এই অন্যায়ের শাস্তি দিতেই আমরা বুদ্ধিমান ন্যয় বিচারকরা শুকিয়ে শুকিয়ে মেরে ফেলছি ওদের। ওরা যাতে সংঘবদ্ধ হতে দেওয়া ঠিক হবেনা ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে একছাতার নিচে আসা বন্ধ করা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্ধুদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই। ওদের দেশ থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা ৫৪ নদীর মধ্যে ৫৩ নদীতে বাঁধ নির্মাণ করেছে যে উপকার তারা করেছে তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ কারন আমাদের এত বাধ নির্মানের সামর্থ্য হয়ত নেই।। উজানে বাঁধ দিয়ে শুষ্ককালে পানি প্রত্যাহার করায় ভাটি অঞ্চলের নদী গুলো প্রাকৃতিকভাবে যে পরিমাণ পানি প্রাপ্তির অধিকার রাখে তা পাচ্ছে না। যার ফলে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে সেচের সংকট সৃষ্টি হয়ত একটু হচ্ছে কিন্তু নদীতে গড়ে উঠা চরগুলোতে আমরা ফসল উৎপাদন করতে পারছি আবাসন করতে পারছি এমন কি শরনার্থীদের কেউ জায়গা করে দিতে পারছি। বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি হঠাৎ ছেড়ে দেয়ায় অতিরিক্ত পলি এসে ভাঙ্গন এবং পলি পতনে নদী ভরাট হয়ে আমাদের স্থলভাগ বেড়ে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারানো নদীগুলোর নতুন নতুন চেহারা দেখতে পারছি। নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে গভীরতা কমে যাচ্ছে বলে ডুবে যাওয়ার ভয় থাকছেনা দুপাড় প্রশস্ত হচ্ছে বলে বনায়ন ও বাধ নির্মানের সুযোগ হচ্ছে ফলে অনেকের কর্মসংস্থান হচ্ছে কারও কারো জীবন মান বাড়ছে। হাজার বছর ধরে সেচের জন্য কৃষক নদী-খাল-বিলের উপর নির্ভর করেছে তা থেকে পরিত্রান পেয়েছি ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে আর্সেনিকের বিষে শরৎ এর আকাশের মত নীল হয়ে যাচ্ছে।  দেশএর উৎপাদন বাড়াতে কৃষি জমির চাপ কমিয়ে আমরা পাক কাদা ছেড়ে  চাষা পরিচয় ত্যগকরে ভদ্দল্লোক (ভদ্র লোক) হতে পারছি শিল্পকারখানা করছি নগরায়ন করছি নদীর কি দরকার সুইমিং পুল আছেনা। সব জল গড়িয়ে গিয়েতো নোনা জলই হতো আর দক্ষিণাঞ্চলে উপকূল হতে ক্রমশ দেশের অভ্যন্তরে নোনাজল প্রবেশ করত। নোনাজল সহিষ্ণু জাতের ধান উদ্ভাবন করতে হতো।
নদী কেবল পানিই বহন করে সেচ কিংবা বন্যার জন্য তা না;অপচনশীল দ্রব্য বহনের ক্ষেত্রে নদীর মতো আর এত সস্তা মাধ্যম নেই জানেনতো সস্তার বার অবস্থা। তাইতো নদীপথ কমিয়ে আনছি। বিশেষ ভাবে অজ্ঞরা (বিশেষজ্ঞ) যেটা বলল না বলল তাতে কি! জলাভূমিকে জলাভূমির মতো রক্ষা করতে গেলে দেশি কৈ শিং এইসব আজে বাজে মাছ যা কুটতেই বিরক্ত এই সব মাছের সংখ্যা বেড়ে যেত উন্মুক্ত জলাশয় বাড়ির আশে পাশে আরো দুষিত হতো। আমরা তো আর মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর ময়নামতির মত সভ্যতায় ফিরে যাবনা যে আমাদের নদীর প্রয়োজন হবে। আমাদের দেশে সবধর্ম বর্নের মানুষই তো আছে তাই আর কাউকে ধর্মের বানী পৌছাতে মাহীসাওয়ার বা কুমিরের সওয়ার হয়ে আসতে হচ্ছে না তাহলে নদীর দরকার কি? সব নদী মরে যাক তাহলে আমরা কত খেলার যায়গা পাবো। এখন যদি কোন স্থাপনা করতে কিছুর দরকার পড়ে তাহলে আকাশ পথে আনব। আমরাতো স্বাধীন তাই আর মুক্তি যুদ্ধ করতে হচ্ছেনা যে হানাদার পরাজিত করতে নদী ব্যবহার করব।