মানুষের জীবনে রঙ একটি জটিল বিষয়। মানুষের জীবনে রং অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক কিন্তু মানুষ অধিকাংশ সময় সেটা এড়িয়ে চলে বা ভাবনায় আনেনা। কিন্তু একটা কাংখিত পৃথিবী হলে রং নিয়ে ব্যপক গবেষণা হওয়া উচিৎ। অথচ আমরা সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করিনা। মানুষের মানবিক অবক্ষয়ের পেছনে রং এর প্রভাব রয়েছে। যদিও এটা নিয়ে কেউ গবেষনা করেছেন কিনা আমার জানা নেই। তবে এটা নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিৎ এবং ফলাফল সকলের জানা উচিৎ। রং আবার ব্যক্তির ত্বকের রং এর পার্থক্যের কারণে ভিন্ন প্রভাব বিস্তার করে যেমন একজন নিগ্রো বা একজন সেতাঙ্গ এর ক্ষেত্রে একই রকম রংগের প্রভাব ভিন্ন হবে। যদিও উভয়েই মানব তথাপী নিদৃষ্ট একটি রংগের প্রভাব উভয়ের জীবন কে ভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করবে। যেমন কমলা রং আশার প্রতীক হলেও উভয়ের ক্ষেত্রে সেটা আশার প্রতীক নাও হতে পারে। যেমন একজন ফর্সা মানুষ কে লাল কাপড়ে স্মার্ট মনে হতে পারে কিন্তু একজন নিগ্রো বা কাল মানুষ লাল কাপড় পরলে তা বিদঘুটে মনে হবে। আমাদের মস্তিষ্ক রং দ্বারা প্রভাবিত হয়। যেমন সবুজ রং চঞ্চলতা বা তারুন্যের প্রতীক হতে পারে কিন্তু সেই সবুজ রং একজন কালো মানুষের সামনে উপস্থিত হলে সেটা চঞ্চলতা বা তারুন্যের প্রভাবক নাও হতে পারে। একটি বিষয় ভেবে দেখা দরকার আমরা শ্রেণী কক্ষে যে ব্লাক বোর্ড ব্যবহার করি তার প্রভাবগত ইতিবাচকতা আমরা কখনো ভেবে দেখিনা। একজন শিশুর সামনে রাখা ব্লাকবোর্ড যা সে প্রতিনিয়ত দেখছে এটা তার মনে কি প্রভাব ফেলতে পারে? এ নিয়ে আমাদের গবেষনা আছে কি? না নেই। সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গী তে হয়ত এটার কোন ধারণা আমাদের নেই। কিন্তু এমন হয়নিতো যে এটা আমাদের শিশুদের মনে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করছে। কালোর উপর সাদা লেখা হয়ত শিশু সহজে বুঝতে পারছে কিন্তু এমন নয়তো যে তার মনে সাদার চেয়ে কালো রং বেশি প্রভাব বিস্তার করছে। সে অনেক বেশি নেতিবাচক হয়ে পড়ছে। আসলে শিক্ষা কি এমন হওয়া উচিৎ নয় যে ইতিবাচক ভেতর ইতিবাচক খুজে নিজের উন্নয়ন ঘটানো। কালো রং কিসের ধারণা বহন করে অন্ধকারের। তাহলে কেন শিশুর সামনে অন্ধকারকে প্রতিষ্ঠিত করা? এটাকি শিশুর ভবিষ্যৎ কে অন্ধকারের পথে ঠেলে দেওয়া নয়? আমার যেটা মনে হয় বর্তমানে যে শিশুরা বিদ্যালয়ে গমণ করে তারা আগের যুগের শিশুদের তুলনায় অনেক বেশি নীচুস্বভাব অর্জন করছে। আগে শিশুরা গুরুজনদের বেশি সম্মান প্রদর্শন করত। এখন কিন্তু গুরুজনদের সম্মান অনেকটায় বেশি হানিকারক হয়ে যাচ্ছে। সম্মান প্রদর্শনের হার অনেকটায় নিম্ন মুখী কিন্তু কেন? আগে কোন শিশু একদিনও যদি ভূল করে বিদ্যালয়ে গমন করে থাকে তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা এখনো শিক্ষকদের সম্মান প্রদর্শন করে ব্যতিক্রম ছাড়া। অথচ বর্তমানের শিশুরা কিন্তু নিদৃষ্ট শিক্ষাস্তর শেষে তার ঐ স্তরের শিক্ষকদের সম্মান দেখানো ভূলে যায় ধীরে ধীরে এক সময় এটাও ভূলে যায় যে তিনি শিক্ষক ছিলেন। এখনকার টিনএজাররা ধুমপান করার ক্ষেত্রে এখন গুরুজন মানতে চায়না অথচ আজ থেকে দুই এক দশক আগেও বড় মানুষের সামনে পান চিবানো চা পান করাটা আদবের খেলাপ বলে গন্য হতো। অথচ এটা যেন এখন কমন ব্যাপার হয়ে গেছে। আসলে এই অবক্ষয়ের পেছনে কারণ কি? এটা কি আমরা ভেবে দেখেছি? না ভেবে দেখিনি। বা এটাকে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহারের কুফল বলে আখ্যায়িত করি বা সমর্থন করি কিন্তু আদৌতে কি তাই? না আসলে এটা রং এর প্রভাব হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। এবং বছরের পর বছর ধরে এটা প্রভাবিত হতে হতে এখন অবক্ষয়ে এসে দাঁড়িয়েছে। আর এই অবক্ষয় থেকে পরিত্রান পেতেও সময় লাগবে অনেক তবে সূচনা এখনই হওয়া উচিৎ। অবশ্যই শ্রেণী কক্ষ হতে কালো বোর্ড অপসারণ করা জরুরী বরং সেখানে বোর্ড গুলো সাদা এবং ব্যবহৃত কালী সবুজ বা কমলা হওয়া উচিৎ বই প্রিন্ট করার ক্ষেত্রেও কালো কালী ব্যবহার বন্ধ করে বিকল্প চিন্তা করা উচিৎ। অর্থাৎ এক কথায় শিশুর সামনে কালো এর ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এমনকি কালো কালীর কলম ও শিশুকে পরিহার করতে হবে। এতে শিশুর হাতের লেখার নান্দনিকতা বৃদ্ধি পাবে।
No comments:
Post a Comment