Adsense

বৈষম্যের অর্থনীতি পশ্চিম নাপাকিস্তান ও পূর্ব বাংলা

পশ্চিম পাকিস্তানের অধীন পূর্ব বাংলাতেই পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬ ভাগই বসবাস করত এছাড়া পাক সরকারের শতকরা ৭০% আয় অর্জিত হতো পূর্ববাংলায়। তবুও পাক এর নাপাকীরা চেয়েছিল পুর্ববাংলাকে পাক উপনিবেশ হিসাবে গড়ে তুলতে ঠিক যেমন ব্রিটিশ রা ভারতকে তাদের উপনিবেশ বানিয়েছিল। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পদলেহনে মত্ত নাপাকী বেনিয়ারা গণতন্ত্রের উপর ভর করে সরকারে নেত্রিত্ব করতে পারবেনা ভেবেই সামরিক শক্তির উপর ভর করে বছরের পর বছর ধরে চালিয়েছে শোষন শাসন আর ভয়াবহ বৈষম্যের যাঁতাকল। পুর্ব বাংলার আয়ের সিকি অংশও পুর্ব বাংলার মানুষের জন্য ব্যয় করা হয়নি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অবাঙালী হওয়ায় বাংগালীরা রাজস্ব আয়ের সুবিধা বঞ্চিত ছিল। শিক্ষাখাতকে পংগু করে বাংগালীদের অশিক্ষিত রেখে তার কাধে বন্দুক তাক করে নিজেরা আয়েশ করতে মত্ত হয়ে উঠেছিল। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার যে দূর অবস্থা বর্তমানে পরিলক্ষিত হয়। তার অন্য তম কারণ হলো বংগবন্ধু নিহত হওয়ার পরে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির পূনর্বাসন ও বেশভূষা পরিবর্তন করে রাষ্ট্রকে যন্ত্রে প্রবেশ করে যার ফল জাতি আজও ভুগছে। পূর্ববাংলার জনগণের শিক্ষার জন্য মাথাপিছু ব্যয় ছিল এক পাই আর পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য ব্যয় ছিল মাথাপিছু চার টাকা ছয় আনা তিন পাই। এখন আনা পাই এর হিসাব নেই বলে হয়ত অনেকে বুঝবেইনা ব্যবধান কত ছিল। শিল্প খাতে পূর্ব বাংলার জন্য মাথাপিছু ব্যয় করা হত পাচ টাকা বার আনা পাচ পাই আর পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য মাথাপিছু ব্যয় করা হত ৭১ টাকা চার আনা পনের পাই। সমাজ উন্নয়নে আমাদের জন্য ব্যয় বরাদ্দ ছিল মাথাপিছু নয় আনা ছয় পাই আর পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য ব্যয় বরাদ্দ ছিল মাথাপিছু পাচটাকা দুই আনা সাত পাই। সরকারে সর্বস্তরে নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংগালীরা নিয়োগ পেত ৪% পশ্চিম পাকিস্তানীরা ৯৬%। পাক সরকারে কেউ গণতন্ত্রের বাহক ছিলনা সবাই বন্দুকের নলের মুখে মীরজাফরী কায়দায় অপরাজনীতির অন্ধকার পথ ধরে। তাদের মনোনীত এই বাংলার প্রতিনিধিরাও ব্যতিক্রম ছিলনা ক্ষমতার মোহে তারাও সুরে সুর মিলিয়ে চলছিল।
সংগৃহীত: 
শেখ ফজলুল হক মনির সম্পাদনা
"বাংলাদেশের গণহত্যা" থেকে

No comments: