google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

google-site-verification: google90012c42a1ba93ca.html

উলংগ সত্য

আমার লেখার ধৈর্য আছে আপনার পড়ার ধৈর্য নেই এটা নগ্ন সত্য।
প্রতিটি চোখের পলক এক একটা জীবনকাল। যতবার চোখে পলক পড়ে ততবার তুমি জন্ম নিলে। প্রতিটি জন্মে তুমি যা দেখলে যা করলে যা বললে তার হিসাব সংরক্ষিত। তার ফলাফল কোন এক নব জনমে অপেক্ষা করে আছে তুমি শুধু তার জন্য প্রস্তুত থাকো। তোমার পলক ঝাপটানোতে যে জীবনকাল শেষ হলো যে গ্রহে তোমার জীবনকাল হিসাব নিকাশ শেষ হলো ফলাফল ঘোষণা ও সেলিব্রেশন শেষ হলো  সেই জন্মের পৃথিবীটা নেতিবাচক হলে তা ব্ল্যাক হোলে মিলিয়ে গেলো। ইতিবাচক হলে আরেকটি পৃথিবীর জন্ম হলো। আমরা যেটাকে জন্ম মৃত্যু বলি সেটা শুধু মাত্র আমাদের মহাজাগতিক পরিভ্রমণের একটি অধ্যায় মাত্র। এই অধ্যায়ে আমরা মহাজাগতিক বিষয়ে যতটুকু জানবো আমাদের যাত্রা শুধুমাত্র সেটুকু সমাপ্ত হলো। মহাজগতের যে টুকু অজানা রয়ে গেলো সেটুকুর জন্য শুরু হবে অপর এক অধ্যায়। যাকে সুফিবাদ বলে পর্দা নেওয়া ধর্ম বলে পরলোকগমন। আর পরবর্তী অধ্যায় সুখমূলক না কষ্টমূলক তা নিয়ে স্বর্গ নরক বা জান্নাত জাহান্নামের অলীকতা। কেউ দিতে পারেনি যার নিশ্চয়তা। কেউ কেউ এটাকে পেতে হুরের পানিয়ের লোভ দেখিয়েছে কেউবা উর্বসীদের সরাবের লোভ দেখিয়েছেন কিন্তু নিশ্চয়তা কেউ দেয়নি শুধু সম্ভাবনা দেখিয়েছেন এটা এটা করো তুমি পেলেও পেতে পারো এটা এটা কোরোনা তাহলে তুমি পাবেনা কিন্তু নিশ্চয়তা কেউ দেননি ছেড়ে দিয়েছেন তিনির উপর অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার উপর, এই সৃষ্টিকর্তাটাই বা কে তিনি দেখতে কেমন তিনি কি করেন কেন করেন তাকে কিভাবে পাওয়া যায়, কি তার নিশ্চিত উপায়?  উপায়তো বলে কিন্তু করে দেখায়না। যিনারা করে দেখিয়েছেন তাদেরকে যারা করে দেখাতে পারেনি তাদের কাতারে নামিয়ে এনে সফল বার্তাবাহক বা মহান খেতাব দিয়েছি, ধর্মের ভাষায় পয়গম্বর বা দেবতা বানিয়ে শুধু দূত হিসাবে চিহ্নিত করেছি এটাই যেন সকলের ধর্ম। আদৌতে সত্য নগ্ন কিন্তু আমরা অন্যত্র মগ্ন। আমার লেখার ধৈর্য আছে আপনার পড়ার ধৈর্য নেই এটাও নগ্নসত্য। 

স্যার জামাল নজরুল ইসলাম শিক্ষা ও কর্মজীবন

জন্ম ও লেখাপড়াঃ জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৩৯ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা তখন সে শহরের মুন্সেফ (বর্তমানে সহকারী জজের সমতুল্য) ছিলেন। তার বয়স যখন মাত্র ১ বছর তখনই তার বাবা কলকাতায় বদলি হন। জামাল নজরুল প্রথমে ভর্তি হন কলকাতা মডেল স্কুলে। এই স্কুল থেকে পরবর্তীতে শিশু বিদ্যাপীঠে। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত এই বিদ্যাপীঠেই পড়েন। পরবর্তীতে আবার মডেল স্কুলে ফিরে যান। কলকাতায় মডেল স্কুলের পর চট্টগ্রামে চলে আসেন। এখানে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য পরীক্ষা দেন। এই ভর্তি পরীক্ষায় বিশেষ কৃতিত্বের জন্য তাকে "ডাবল প্রমোশন" দিয়ে সরাসরি ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করে নেয়া হয়। নবম শ্রেণি পর্যন্ত তিনি এই স্কুলে পড়াশোনা করেন। এখানে পড়ার সময়ই গণিতের প্রতি তার অন্যরকম ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। অনেক অতিরিক্ত জ্যামিতি সমাধান করতে থাকেন। নবম শ্রেণিতে উঠার পর পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে পশ্চিম পাকিস্তান চলে যান এবং সেখানে সেন্ট লরেন্স কলেজে অধ্যায়ন শুরু করেন। এই কলেজ থেকেই তিনি সিনিয়র কেমব্রিজ ও হায়ার সিনিয়র কেমব্রিজ পাশ করেন। এ সময় নিজে নিজে অনেক অঙ্ক কষতেন। বিভিন্ন বই থেকে সমস্যা নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করতেন যা পরবর্তীতে তার অনেক কাজে আসে। উল্লেখ্য, হায়ার সিনিয়র কেমব্রিজে তিনি একাই গণিত পড়েছিলেন। এটা বেশ উচ্চ পর্যায়ের গণিত হওয়ায় সবাই ভয় পেত। এ সময়ই গণিতের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। লরেন্স কলেজের পাঠ শেষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সেন্ট জেভিয়ার্স  কলেজ থেকে বিএসসি সম্মান সমাপ্ত করেন। এই কলেজের একজন শিক্ষককে তিনি নিজের প্রিয় শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করেছেন যার নাম "ফাদার গোরে"। গণিতের জটিল বিষয়গুলো খুব সহজে বুঝিয়ে দিতেন বলেই তিনি তার ভক্ত হয়ে পড়েছিলেন। গোরে তার কাছে গণিতের বিভিন্ন বিষয় জানতে চাইতেন এবং তিনি আগ্রহভরে তা শেয়ার করতেন। গোরের সাথে জামাল নজরুল ইসলামের সম্পর্কের কারণ বলতে গিয়ে তিনি বলেন, "গণিতকে এমনিতেই অনেকে ভয় পেত। কিন্তু এটির প্রতিই ছিল আমার অসীম আগ্রহ, ঝোঁক। এ কারণেই বোধহয় তিনি আমাকে পছন্দ করতেন"। বিএসসি শেষে ১৯৫৭ সালে জামাল নজরুল ইসলাম কেমব্রিজে পড়তে যান। কেমব্রিজের প্রায়োগিক গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান থেকে ১৯৫৯ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবংএখান থেকেই ১৯৬০-এ স্নাতোকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৬৪ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই প্রায়োগিক গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে পি,এইচ,ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে এসসিডি (ডক্টর অফ সায়েন্স) ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবনঃ স্যার জামাল নজরুল ইসলাম তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড এর ডক্টরাল-উত্তর ফেলো হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি কেমব্রিজের ইনস্টিটিউট অফ থিওরেটিক্যাল অ্যাস্ট্রোনমিতে (বর্তমানে ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোনমি) ১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত কাজ করেন। এখানে তিনি আইনস্টাইনের তত্ত্ব নিয়ে কাজ করতেন এবং সেই সূত্রে রুম মেট স্টিফেন হাকিন্স এর সঙ্গে পরিচয় ও সখ্যতা গড়ে ওঠে৷ ১৯৭১ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি ভিজিটিং সহযোগী হিসেবে কঅর্মরত ছিলেন এবং ১৯৭২ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত তিনি লন্ডনের কিংস কলেজে ফলিত গণিতের প্রভাষক ছিলেন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি কলেজ, কার্ডিফ  (বর্তমানে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয় ) এর সায়েন্স রিসার্চ কাউন্সিলের ফেলো ছিলেন। ১৯৭৮ সালে তিনি লন্ডনের সিটি ইউনিভার্সিটিতে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন এবং পরে রিডার পদে উন্নীত হন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটনে অবস্থিত  ইন্সটিটিউট ফর এডভাঞ্চড স্টাডিজ এ ১৯৬৮, ১৯৭৩ ও ১৯৮৪ সালে ভিজিটিং সদস্য হিসেবে কাজ করলেও দেশ মাতৃকার টানে ১৯৮১ সালেই তিনি চট্টগ্রামে ফিরে এসেছিলেন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র দুই হাজার আটশো টাকা সম্মানীতে গণিতের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এখানেই এক অপ্রত্যাশিত ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে। এক বছর অধ্যাপনা করার পরে পুনরায় বিদেশে যেতে চাইলে কিছুতেই বিশ্ববিদ্যালয় সিণ্ডিকেট থেকে ছুটি পাননি তিনি। ফলে সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে বিদেশযাত্রা করেন জামাল নজরুল ইসলাম এবং পরবর্তীকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সব স্থায়ী বাড়ি-ঘর, জমি-জায়গা বিক্রি করে দিয়ে পাকাপাকিভাবে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে চলে আসেন। তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে পুনরায় অধ্যাপক পদে বহাল করে সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করে। ১৯৮৪ সালে দেশে ফিরে এসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা বিভাগে অধ্যাপক কোটা খালি না থাকায় তিনি গণিত বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করেন এবং গড়ে তোলেন উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণাগার, আন্তর্জাতিক মানের গাণিতিক ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্র  বা রিসার্স সেন্টার ফর ম্যাথম্যাটিক্যাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্স (আরসিএমপিএস) গড়ে তোলেন এবং এখানেই এমিরেটাস অধ্যাপক হিসেবে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করেন। তিনি একাধারে গণিতবিদ, পদার্থবিজ্ঞানী, জোতির্বিজ্ঞানী, বিশ্বতত্তবিদ। তিনিই একমাত্র বাংগালী যার লেখা বই কেমব্রিজ কর্তৃক প্রকাশিত এবং বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এমনকি তেল-আবিব বিশ্ববিদ্যালয়েই। জোতির্বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়ের উপর রচিত এত সমৃদ্ধ বই দ্বিতীয়টি নেই।

এগার সিন্ধু

ফেরিওয়ালাঃ এগারো সিন্ধু মুলত একটি দূর্গের নাম। এটি মোঘল আমলের একটি প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর থেকে আট কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। ইতিহাস অনুযায়ী, একসময় বারো ভূঁইয়া সম্রাট ঈসা খাঁ মোঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এই দুর্গ ব্যবহার করেছিলেন। মোঘল সম্রাট জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ আকবর বাংলা জয়ের সংকল্প করলে তার বিজ্ঞ সেনাপতি মানসিংহ এগার সিন্ধু দূর্গ আক্রমন করেন। ইতিহাসের সাক্ষ্য বহনকারী দুর্গটির অস্তিত্ব অযত্ন অবহেলার ফলে অনেক আগেই বিলীন হয়ে মাটির ঢিবিতে রূপ নিয়েছে। এই ঢিবি খননকালে অনেক প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনের সাথে পাওয়া গেছে ‘ধাপযুক্ত স্থাপনা’। যা এই দেশের স্থাপত্য শিল্পের আরেকটি উজ্জ্বল ও অনন্য ইতিহাস। এমন ধাপযুক্ত স্থাপনাকে বাংলাদেশের প্রাচীন স্থাপত্য সংস্কৃতির ইতিহাসের বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রত্নতত্ববিদগন। তাঁরা বলছেন, বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসে মিসরের পিরামিডে প্রথম ধাপ যুক্ত নকশার দৃষ্টান্ত দেখা যায়। এগারসিন্দুর দুর্গে যে ধাপযুক্ত স্থাপনার সন্ধান মিলেছে সেটি বাংলার ইতিহাসের প্রাক্‌ মুসলিম (১২০৪ সালের আগের সময়) স্থাপত্য কাঠামোর স্বতন্ত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হিসেবে পরিগনিত হচ্ছে। দুর্গ সন্ধান করে মিলেছে তোপ মঞ্চ। ধারণা করা হচ্ছে ঈসা খাঁর সৈনিকেরা এটি ব্যবহার করে কামান থেকে গোলা ছুড়তেন। তোপ মঞ্চটি সমতল থেকে ৯ মিটার উচ্চতায়।

এগারসিন্ধুর দুর্গ খননের তৃতীয় ধাপের কাজ সমাপ্ত। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ওই বিরল স্থাপনার সন্ধান পাওয়ার তথ্য সবার সামনে আনেন। এগারসিন্ধুর দুর্গ ঈদগাহ ময়দানে এখন পর্যন্ত ২৫০টির মতো প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে। এর মধ্যে প্রাচীন সময়ের চীনা মাটির পাত্র, পাথর খণ্ড, জীবাশ্ম, লৌহপিণ্ড, কালো চকচকে প্রলেপযুক্ত মৃৎপাত্র, লাল চকচকে প্রলেপযুক্ত মৃৎপাত্র, জীবজন্তুর হাড়, ছাই, কয়লা ইত্যাদি। বাংলার উত্থান-পতনের ইতিহাসে ঈসা খাঁর জীবনসংগ্রামের গুরুত্ব অনেক। এগারসিন্ধুর এলাকায় ঈসা খাঁর শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটি ছিল। যা শাহ গরীবুল্লাহর মাজার নামে পরিচিত। এই এলাকায় তৎকালীন সময়ের দুটি মসজিদ রয়েছে। ধাপ যুক্ত স্থাপনায় সাতটি ধাপ রয়েছে প্রতি ধাপের উচ্চতা তিন মিটার যা ভদ্র নকশা খচিত। সৌজন্যে প্রথম আলো।

LORD MACLE EDUCATION POLICY AND THIRD WORLDS EDUCATION

AUTHORS SAID
Downward Fertility Policy Lord McLean's education policy is once thought to be deceptive, but it seems to be time-bound now. The education system has been driven from top to bottom in the downward stages of policy. Where it has been said education or knowledge will gradually move downwards from above. Nature is its finest example. How do we take care of such a plant? The water from above helps gradually increase the seedlings by developing food mixed in the ground and then progressing downwards. We are from below to grow a plant. Children learn to imitate adults Accordingly, they are learning from the senior members of the society and they are learning. They are reading from their childhood but they are distracted by the society they read so that they do not use what they are learning from the book, they are learning from the elders of the society, because the rate of education increases but the changes are not happening.
And the intellectuals in the era can oppose this policy, because it is necessary to change before starting this policy, which is contrary to the interests of the person. So they chose the way from the bottom to the bottom, so it is seen that the child is the child

Mr Perfect man

পৃথিবী একটা টেষ্ট কেস এখানে কোন কিছুই পারফেক্ট না। যিনি সবকিছু পারফেক্ট পাবেন তিনি পরবর্তী রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত হবেন, বাকিরা যেখান থেকে এসেছিলেন সেখানেই ফিরে যাবেন। আবার শুরু হবে নতুন ট্রায়াল এখানেও কিছু মানুষ পরবর্তী রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত হবেন। কিছু মানুষ ফিরে যাবেন একই প্রক্রিয়ায়। যিনি বাছাই পর্বে এতো বেশি পয়েন্ট অর্জন করবেন যে তার পয়েন্ট চ্যাম্পিয়ন এর স্কোর অতিক্রম করবে ফলে তাকে আর ফিরে আসতে হবেনা এবং তিনি পারফেক্ট অর্জন করবেন। আজকাল ঈমানদার মানুষ বলে দাবীদ্বারেরা অন্যের ধর্মকে ছোট করে দেখে অথচ আল কোরান স্বাক্ষ্য দেয় এমন কোন জনপদ নেই যেখানে সৃষ্টিকর্তা পথ প্রদর্শক পাঠান নি। অর্থাৎ আমাদের জানা অজানা সকল জনপদেই কখনো না কখনো পথ প্রদর্শক এসেছিলেন। কেউবা নবী রুপে কেউবা রাসুল রুপে কেউবা উভয় রুপে। তবে পারফেক্ট এবং লেটেস্ট হিসাবে এসেছিলেন হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এবং তিনি প্রমাণ করে গেছেন যে কোন অবস্থাতেই পারফেক্ট হওয়া যায় পারফেক্ট থাকা যায়। তাই বলা হলো নবী বা রাসুল রুপে আর কেউ আসবেন না। তার অর্থ আমরা দাড় করিয়েছি আর কেউ কখনোই আসবেননা পথ প্রদর্শক রুপে। এটা ইয়াজিদ পরবর্তী মুসলিম উম্মার বক্তব্য। যদি কোন পথ প্রদর্শক নাই আসেন তবে বাঘের পিঠে মাছের পিঠে চেপে যারা পথ দেখাতে এসেছিলেন এরা কি ষষ্ঠীর জামাই? আসলে প্রতিটি জনপদে কেয়ামত পর্যন্ত পথ প্রদর্শক আসতে থাকবেন এবং আসবেন তবে নবী রুপে বা রাসুল রুপে নয়। হয়তো কবি রুপে হয়তো রবি রুপে বা বিজ্ঞানী রুপে বা ডাক্তার রুপে বা রাজনীতিবিদ হিসাবে তবে আসবেন।  এখন প্রশ্ন হলো তাদের আমরা চিনব কিভাবে। আসলে তাদের কে চিনতে হলে আত্মার পরিশুদ্ধতা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত জ্ঞ্যন, বিচার বিশ্লেষণ ক্ষমতা এগুলো থাকতে হবে। আছে এগুলো আমাদের?  আছে হালাল উপার্যন নীতি নৈতিকতা? তাহলেতো চেনা দায়। সাগরের জল যদি কালি হয় আর গাছ যদি কলম হয় কোরআনের একটা ১টা আলিফের তাফসির করে কেউ শেষ করতে পারবে? সবাইতে তাফসির পড়েন তাফসির পড়েন বোঝেন, কেউ কেউতো আবার একঘন্টার চুক্তিতে একটা আয়াত বা সুরার তাফসির করে ফেলে নিজের পান্ডিত্য জাহির করে ফেলেন। আর এ সকল ধর্মব্যবসায়ীদের তাপে আপনার পথ প্রদর্শক খোজার বাতিক শেষ হয়ে যাবে। ভাববেন যদি পিছু লোকে কিছু বলে? যদি নাস্তিক বা মুরতাদ ঘোষণা করে! আরে ভাই আপনার উদ্দেশ্য যদি সৃষ্টিকর্তার আনুগত্য হয় তবে কে কি ভাবলো তা নিয়ে এত মাথা ঘামানো কেন? ওরা পথ প্রদর্শক এর পথ গোপন রেখেছে শুধু নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলের জন্য। এক একটা মামুনুল যেটা পারে একজন সাধারণ মুসলিম যিনি রাসুল (স) এর নামটাও ঠিক মতো উচ্চারণ করতে পারেননা তারাও এত নীচে নামার কথা কল্পনার মাধ্যমেও সাহস করেনা। 
শেষ একটা উপদেশঃ  ইসলাম আপনার, রাসুল আপনার,  কোরআন ও আপনার যা সৃষ্টি কর্তা কর্তৃক আমার আপনার কল্যাণের জন্য উত্তম নিয়ামত তা নিয়ে বিভ্রান্ত না হয়ে নিজে শিখুন নিজের চিন্তা চেতনাকে প্রসারিত করুন আত্মশুদ্ধি অর্জন করুন পারফেক্ট হন। কোরআন এমন এক গ্রন্থ যা নিয়ে তর্ক করে আপনি মনে করলে শয়তানকেও জেতাতে পারবেন আর যার জিনিস তাকে জেতানো যাবে এটাতো বলার অপেক্ষায় রাখেনা। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

পূর্নব্রহ্ম হরিচাদ ঠাকুর

শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন। অবিভক্ত ব্রিটিশ বাংলার ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার সফলাডাঙা গ্রামে ১৮১২ খ্রিস্টাব্দের ১১ মার্চ বুধবার (বাংলা ১২১৮ সালে) মহামানব হরিচাঁদ ঠাকুর নমঃজাতির এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। হরিচাঁদ ঠাকুরের পিতার নাম যশোমন্ত ঠাকুর ও মাতার নাম অন্নপূর্ণা। হরিচাঁদ ঠাকুরের বাল্যকালের নাম ছিল হরিদাস।  তাঁরা পাঁচ ভাই ছিলেনতাঁদের নাম ছিল যথাক্রমে- ১) কৃষ্ণদাস২) হরিদাস৩) বৈষ্ণবদাস৪) গৌরীদাস এবং ৫) স্বরূপদাস। হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবনলীলা বিষয়ক শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত নামে একখানি গ্রন্থ লেখেন কবি তারকচন্দ্র সরকার। সেই গ্রন্থ থেকে হরিচাঁদ ঠাকুর সম্পর্কে আমরা অনেক কিছু জানতে পারিহরিচাঁদ ঠাকুরের পিতা পরম বৈষ্ণব অর্থাৎ কৃষ্ণভক্ত ছিলেনকেউ কেউ তাঁকে যশোমন্ত বৈরাগী বলেও ডাকতেন। তাঁদের পদবি বিশ্বাস  হলেও কয়েক পরুষ আগে নিত্য সাধুসেবা ঠাকুরপূজা বৈষ্ণবধর্মের আচার পালন করার জন্য তাঁরা সকলের কাছ থেকে ঠাকুর উপাধি পেয়েছিলেন তারপর থেকে যশোমন্ত ও তাঁর পুত্রদের ঠাকুর বলে সবাই জানতেন সেই জন্য তাঁদের ঠাকুর পদবি হয় বাল্যকালে হরিচাঁদ খুবই দুরন্ত ছিলেন বাল্যসঙ্গী ছিল ব্রজনাটুবিশ্বনাথ প্রমুখের সঙ্গে তিনি গোরু চরাতে যেতেন। বৈষ্ণবদের তিনি সহ্য করতে পারতেন না। বাড়িতে বৈষ্ণবেরা এলে পিতা যশোমন্ত ঠাকুর তাদের চরণামৃত পান ও পদধূলি নিতে বললে তিনি তা অমান্য করতেন। অনেক সময় তাঁদের বাড়িতে বৈষ্ণবেরা এলে তাদের ঝোলা পর্যন্ত লুকিয়ে জলে ফেলে দিতেন। হরিচাঁদ ঠাকুরের স্ত্রীর নাম শান্তিবালা যাকে শান্তিমাতাও বলা হয়। তাঁর পিত্রালয়ছিল ফরিদপুর জেলার (বর্তমান বাংলাদেশে) জিকাবাড়ি গ্রামেতাঁর পিতার নাম ছিল লোচন প্রামাণিক। হরিচাঁদ ঠাকুরেরা জমিদার সূর্যমণি মজুমদারের জমিদারিতে বাস করতেনজমিদার সূর্যমণি মজুমদার মিথ্যা মামলায় ডিক্রি জারি করে ঠাকুরদের বাড়ি নিজের নামে নিয়ে নিয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে তাঁরা সফলাডাঙা ত্যাগ করে সেই জেলারই রামদিয়ায় সেন বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে পরে পার্শ্ববর্তী গ্রাম ওড়াকান্দিতে শ্রীভজরাম চৌধুরীর বাড়িতে আশ্রয় নেন হরিচাঁদ ঠাকুর প্রথাগত বিদ্যাশিক্ষার কোনো সুযোগ পাননিতখনকার দিনে নমঃজাতিকে চণ্ডাল বলা হতচণ্ডালজাতি অস্পৃশ্য বলে তাঁদের বিদ্যাশিক্ষার অধিকার ছিল না। তাই তিনি বিদ্যালয়ে যেতে পারেননি। যে জন্য তিনি লেখাপড়া শিখতে পারেননি। লেখাপড়া না জানলেও তিনি ছিলেন প্রখর বুদ্ধিমত্তা ও অত্যন্ত মেধা সম্পন্ন জ্ঞানী ব্যক্তি। ছেলেবেলাতেই তাঁর বুদ্ধিমত্তার পরিচয় বন্ধুদের কাছে প্রকট হয়ে ওঠে। বন্ধু এবং সাথীরা সকলে তাই তাঁকে ঘিরে থাকতেন। সকলের সব সমস্যার মীমাংসা করে দিতেন তিনি। প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষিত না হয়েও প্রখর বুদ্ধিমত্তার জোরে বিজ্ঞান ও যুক্তিনির্ভর বৌদ্ধিকদর্শন উপলব্ধি করেছিলেন তিনি। কর্মজীবনে তাঁর এই জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তার দ্বারা শোষিত বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অর্থাৎ পতিত মানুষদের মুক্তিদূত হিসাবে তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন। তখনকার দিনে এখনকার মতো চিকিৎসা ব্যবস্থার বিশেষ কোনো সুযোগ ছিল নাএত উন্নতিও ছিল নাগ্রামাঞ্চলের অবস্থা ছিল খুবই করুণ। গ্রামাঞ্চলে কোনো ডাক্তারই ছিল নাবিশেষ করে পতিত জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত গ্রামগুলিতেওঝাদের ঝাড়ফুঁককবচ-তাবিজ ধারণ আর ঈশ্বরের উপর নির্ভরই ছিল তাদের একমাত্র চিকিৎসাএই অবস্থায় হরিচাঁদ ঠাকুর নিজস্ব বুদ্ধিমত্তার বলে গ্রাম্য মানুষদের প্রাকৃতিক চিকিৎসার চিকিৎসকের ভূমিকা গ্রহণ করেনরোগমুক্তির জন্য তিনি বিভিন্ন রোগে বিভিন্ন রকমের ব্যবস্থা  দিতেনসেইসঙ্গে রোগীর মনোবল বৃদ্ধির জন্য রোগীর বাড়িতেরোগীকে সঙ্গে নিয়েই হরিবোল নামের কীর্তন করতেন। এই চিকিৎসা এবং নামকীর্তনের ফলে রোগীর মানসিক শক্তিবৃদ্ধির কারণে অধিকাংশ রোগেরই উপসম হতএর ফলে গ্রাম্য মানুষদের কাছে তিনি উদ্ধার কর্তার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যান।  তখনকার বৈদিক ধর্মে প্রভাবান্বিত গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে তিনি ঈশ্বরের অবতার রূপে পরিগণিত হন। হরিচাঁদ ঠাকুর পিছিয়ে পড়া সমাজের মানুষের জন্য সকল রকম সামাজিক কাজেও অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন। কৃষকদের প্রতি নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের প্রতিবাদে কৃষকদের নিয়ে তিনি গোপালগঞ্জ মহকুমার জোনাসুর নীলকুঠি অভিযানের নেতৃত্ব দেন। সংসার প্রতিপালনের জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত হন। এক সময় তিনি তেলের ব্যবসা করেন। বিভিন্ন মুদিদ্রব্য নিয়ে এক সময়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিক্রি করেও বেড়িয়েছেন। ব্যবসাবৃত্তির প্রসার ও বিজ্ঞান সম্মত উন্নততর পদ্ধতিতে অনাবাদী জমি চাষ করে চাষের উন্নতি ঘটিয়েছিলেন। এই সমস্ত কাজ করে তিনি সকল পিছিয়ে পড়া মানুষদেরকে সংসার প্রতিপালন ও উন্নত জীবন গড়ার ক্ষেত্রে সঠিক পথের দিশা দেখিয়েছেন অলীক কল্পনা অসাম্য ও মিথ্যা ভেদভাব সৃষ্টিকারী বৈদিকধর্ম তথা হিন্দুধর্মের অমানবিক নীতি-নিয়মের বিরুদ্ধে যুক্তিবাদকে প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে ধর্ম এবং অলীক কল্পনায় ভরা ধর্মগ্রন্থের বিরুদ্ধে বেদপুরাণমনুসংহিতা প্রভৃতি গ্রন্থগুলির স্বার্থান্বেষী বিধানের বিরুদ্ধে ছিল হরিচাঁদ ঠাকুরের প্রকৃত সংগ্রাম শাস্ত্রের নামে প্রচলিত মিথ্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন "কুকুরের উচ্ছিষ্ট প্রসাদ পেলেও  খাই, বেদবিধি শৌচাচার নাহি মানি তাই।"  অবশেষে তিনি বেদবিধি বহির্ভূত একটি নতুন ধর্মের সূচনা করেন, যার নাম মতুয়াধর্ম হরিচাঁদ ঠাকুর তাঁর সঙ্গী সাথিদের নিয়ে  যেভাবে হরিবোল’ ধ্বনিতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতেনবৈদিকতাকে বর্জন করে যে সমস্ত আচার অনুষ্ঠানে মত্ত হতেন তাই দেখে তাঁর বিরোধীরাবিশেষ করে ব্রাহ্মণ-কায়স্থরা ব্যঙ্গ করে তাঁদের মত্তমউত্যামতুয়া নামে অভিহিত করত। হরিচাঁদ ঠাকুরও সেই মতুয়া নামটি মেনে নিয়েছিলেন। তিনি নিজেই বলেছেন- ভিন্ন সম্প্রদায় মোরা মতুয়া আখ্যানএখন যাঁরা হরিচাঁদ ঠাকুরের অবৈদিক আদর্শ পালন করে চলেন তিনি বা তাঁরাই মতুয়া। এই মতবাদ প্রতিষ্ঠার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে কুসংস্কারাচ্ছন্ন শিক্ষাহীন ধর্মহীন পতিত নমঃজাতিসহ অন্যান্য অধঃপতিত জাতিদেরকে একটি ধর্মের বন্ধনে আবদ্ধ করাউন্নততর গার্হস্থ্য জীবনে পূর্ণ শান্তিলাভের উপায় নির্ধারণ করা এবং সামাজিক অসাম্যের বিলোপ সাধন করে বিশ্ব-সৌভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠা করা। মতুয়াবাদ কর্ম এবং ন্যায়-নৈতিকতার ধর্মযে কর্ম নির্দোষবিজ্ঞান সম্মত এবং সাধুজন দ্বারা প্রশংসিত। যা আসলে সত্যিকারের মানবতাবাদী ধর্ম হিসাবে পরিচিত। এই ধর্মের মূল বৈশিষ্ট্য হলো কর্মভিত্তিক সত্যসাম্যপ্রেম ও পবিত্রতার নিদর্শন

হরিচাঁদ ঠাকুর মতুয়াবাদ পালনের জন্য প্রধান নির্দেশ গুলি হলো-
১) সদা সত্য কথা বলা,
২) পরস্ত্রীকে মাতৃজ্ঞান করা,
৩) পিতামাতাকে ভক্তি করা,
৪) জগৎকে প্রেমদান করা অর্থাৎ সকল জীবকে ভালোবাসা,
৫) জাতিভেদ না করা,
৬) কারও ধর্মনিন্দা না করা,
৭) বাহ্য অঙ্গ সাধুসাজ ত্যাগ করা,
৮) শ্রীহরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করা,
৯) ষড়রিপু  থেকে সাবধান থাকা,
১০) হাতে কাম মুখে নাম করা,
১১) দৈনিক প্রার্থনা করা ও
১২) ঈশ্বরে আত্মদান করা
এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তিনি তাঁর ভক্তদের আরও বহু উপদেশ দিয়েছেন

মতুয়াবাদে পিতামাতাই হলেন প্রধান ঈশ্বর। তাঁরাই সৃষ্টিকর্তাসন্তানকে লালন পালন করে তাঁরাই মানুষ করে তোলেনসন্তানেরও প্রথম ও প্রধান কর্তব্য হল পিতামাতার সেবা করাতাঁদের দুঃখকষ্টঅভাব-অভিযোগের আশু সমাধান করা। মতুয়াবাদে ঈশ্বরের সংজ্ঞা হলো যে যারে উদ্ধার করে সে তার ঈশ্বর  উদ্ধার অর্থাৎ অধঃপতিত অবস্থা থেকে উন্নততর জীবনে উত্তরণ ঘটানো। আর সেই ঈশ্বরের আদর্শপালন করাই তাঁর কাছে আত্মদান। এখানে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরই পতিত জাতির উদ্ধারকর্তাতাঁর আদর্শ অনুসরণ করাই তাঁর প্রতি আত্মদান। মতুয়াবাদে কাল্পনিক দেবদেবীর কোনো স্থান নেই কিংবা তাদের পূজা করবারও কোনো বিধান নেই। কিন্তু  দুঃখের বিষয়অনেক মতুয়াধর্মী লোকের ঘরে বিভিন্ন পূজার প্রচলন দেখা যায়।  হরিচাঁদ ঠাকুরের প্রতিকৃতির পাশে নানা দেবদেবীর প্রতিকৃতি রেখে পূজা-অর্চনা করতে দেখা যায়।  এটা কোনোমতেই ঠিক নয়। মতুয়াবাদে কাল্পনিক দেবদেবীর পূজা নিষিদ্ধ। এ সম্পর্কে হরিচাঁদ ঠাকুরের পুত্র আর এক মহামানব গুরুচাঁদ ঠাকুর বলেছেন-মতুয়ার পক্ষে কোন পূজা পর্ব নাই কিন্তু সাধারণ মতুয়ারা ব্রাহ্মণদের প্ররোচনায় অভ্যাসবশে এসব করে চলেছেন। মতুয়াবাদের  প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হচ্ছে সত্যপ্রেমপবিত্রতাসাম্যমৈত্রী ও সততাসকলের প্রতি ভালোবাসা,কাউকে ছোটো বা নীচ না ভাবাসকলের জন্য সমান স্বাধীনতাসমান অধিকারকাল্পনিক কোনো ঈশ্বরের সন্ধান না করে মানুষ তথা জীবসেবার মাধ্যমেই আনন্দপ্রাপ্তি অনুভব করা ইত্যাদি। মতুয়াবাদ অনেকটাই ভারতের প্রাচীন সনাতনধর্ম ও বৌদ্ধধর্মের সংমিশ্রণ। তবে তার থেকেও একে আরও সহজ সরল গৃহধর্মীযুক্তিবাদী ও বিজ্ঞানসম্মত করা হয়েছে। প্রাচীন সনাতন ধর্মের সঙ্গে মতুয়াধর্মের বহুলাংশে সামঞ্জস্য রয়েছে। সাম্য ও ন্যায়-নৈতিকতাকে ভিত্তি করে গড়ে ওঠা আদি সনাতন ধর্মে কোনো বর্ণভেদ ছিল না,জন্মগত কারণে কেউ উচু বা নীচ ছিল না। সমাজে সকল বিষয়ে সকলের ছিল সমানাধিকার। মতুয়ামতবাদ  এই সকলকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। এজন্য এই মতবাদ কে সূক্ষ্ম সনাতনধর্ম বা মতুয়াধর্ম নামে অভিহিত করা হয়
হরিচাঁদ ঠাকুর তাঁর প্রবর্তিত সহজ-সরল ধর্ম মতুয়াধর্ম প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে এই জাতির উন্নতিকল্পে যে সকলের মধ্যে শিক্ষা প্রসারের প্রয়োজন এই উপদেশই দিতেন। অবশ্য শিক্ষা দানের জন্য তিনি তাঁর স্বল্পকালীন জীবদ্দশায় তখনকার পরিবেশ পরিস্থিতির মধ্যে বিশেষ কিছু করে যেতে পারেননিকিন্তু তাঁর এই অপূর্ণ কাজ পূর্ণ করার জন্য পুত্র গুরুচাঁদ ঠাকুরকে নির্দেশ দিয়ে যান। প্রকৃতপক্ষে ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারতবর্ষে মতুয়া মতবাদের  প্রবর্তন- বেদব্রাহ্মণযাগযজ্ঞ বিরোধী এক আন্দোলন যা দলিত শ্রেণীর উপর ধর্মের নামে নিষ্পেষণ বন্ধের বিপ্লব  বা দলিত শ্রেণীর ধর্মবিপ্লব। জাতপাতধর্মবর্ণসম্প্রদায় ইত্যাদি বিভেদপন্থীদের বিরুদ্ধে হরিচাঁদ ঠাকুর কর্তৃক এ এক যুদ্ধ ঘোষণা। মতুয়ারা প্রত্যেকই সেই যুদ্ধের এক-একজন সৈনিকযে যুদ্ধে নারী ও পুরুষেরা সমান মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত। মতুয়াবাদে ত্রিকোণ লাল বর্ণের পতাকার তিনদিকে সাদা প্রান্তরেখা। লাল অর্থাৎ বিপ্লব বা অগ্রগতির জন্য লাগাতার সংগ্রাম এবং সাদা অর্থাৎ শান্তির প্রতীক। প্রকৃতপক্ষে সকলের সঙ্গে সম-অধিকারে সহাবস্থানের নীতিতে শান্তির,জন্য বিপ্লব সমাজের অস্পৃশ্যতা অসাম্য আমার আমার ও কুসংস্কার অমানবিকতা ও মানবীয় ভেদাভেদ দূর করে সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য বিপ্লব। যুদ্ধজয়ের প্রতীক যেমন মতুয়ার হাতের নিশান,  তেমন সেই যুদ্ধজয়ের ঘোষণা তথা উন্মাদনাকে আরও আরও মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে উদ্বুদ্ধ করতে ধ্বনিত হয় জয়ডঙ্কাকাঁসর ও শিঙার ধ্বনি। সমস্ত মানুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠাই মতুয়াবাদের মূল উদ্দেশ্য নারী ও পরুষের মধ্যে সমাজে যে বৈষম্য বিদ্যমান তাঁর বিরুদ্ধেও হরিচাঁদ তাঁর মত জানিয়েছেন নারী নরকের দ্বারএর বিরুদ্ধে তিনি বলেন- নারীকে অবজ্ঞা করে আদর্শ গার্হস্থ্যধর্ম প্রতিষ্ঠা করা যায় না।  নারী গৃহের কেন্দ্রস্থল।  নারীকে বাদ দিয়ে সংসারের কল্পনা করা যায় না। নারীকে সঙ্গে নিয়ে ধর্মপথে অগ্রসর হতে হয়  এইজন্যই তিনি নারীশিক্ষা নারীর মর্যাদা দান ও অধিকার রক্ষার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেন। হরিচাঁদ ঠাকুর মাত্র ছেষট্টি বছর জীবিত ছিলেন ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মার্চ (বাংলা ১২৮৪) ভোরবেলা তিনি প্রয়াত হন। তাঁর জন্মদিনের মতো সেই দিনটিও ছিল বুধবার। প্রয়াণের পূর্বে তিনি তাঁর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার ভার তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র মহামানব গুরুচাঁদ ঠাকুরের উপর সঁপে দিয়ে যান। গুরুচাঁদ ঠাকুর পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর পিতার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন তার স্মৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তার আবির্ভাব  দিবস পালনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ ছুটি ঘোষণা করে থাকে। 

হরিচাঁদ ঠাকুর

ফেরিওয়ালাঃ 
হরিচাঁদ ঠাকুর (১১ মার্চ ১৮১২ – ৫ মার্চ ১৮৭৮) মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রবর্তক ছিলেন। তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া নিম্নশ্রেণির অথবা, দলিত মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছেন। শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ১১ মার্চ ১৮১২ ওড়াকান্দি ইউনিয়ন, কাশিয়ানী উপজেলা, গোপালগঞ্জ জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি , ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) মৃত্যু ৫ই মার্চ ১৮৭৮ শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই মার্চ অবিভক্ত বাংলার গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার অন্তর্গত ওড়াকান্দির পার্শ্ববর্তী সাফলাডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার মাতা-পিতার নাম অন্নপূর্ণা বৈরাগী ও যশোমন্ত বৈরাগী। তার প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা সেভাবে হয়নি, কিন্তু প্রেম-ভক্তির কথা সহজ-সরলভাবে প্রচার করতেন। বৈষ্ণব বাড়িতে জন্ম হওয়ার কারণে শাস্ত্র আলোচনার মাধ্যমে হিন্দু ও বৌদ্ধ শাস্ত্রের সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন, বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করার সুযোগে অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান অর্জন করেছিলেন তিনি। তার প্রচলিত সাধন পদ্ধতিকে বলা হতো মতুয়াবাদ। তার দুই ছেলে গুরুচাদ ঠাকুর ও উমাচরণ। গুরুচাঁদ ঠাকুরের পিতা শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের মৃত্যুর পর মতুয়া ধর্মের উন্নতিসাধন, শিক্ষার প্রসারে ব্রতী হয়েছিলেন। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবনী নিয়ে কবি রসরাজ তারক চন্দ্র সরকার শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত নামক গ্রন্থটি রচনা করেন। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর কলি যুগের শ্রীবিষ্ণু'র একজন বিশেষ অবতার যা তার অনুসারিরা(ভক্তরা) সকলে বিশ্বাস করেন এবং তাকে বলা হয় পতিতপাবন। তাঁর ভক্তরা তাঁকে শ্রীচৈতন্যদেব এবং গৌতম বুদ্ধের যৌথ অবতার বলে মনে করতো। তাঁর প্রচারিত মতুয়া ধর্মে কোনো দেব-দেবীর স্থান নেই। ভক্ত ও অনুসারীদের উদ্দেশ্যে তিনি একটি বাণী প্রচার করেছিলেন 'মুখে নাম হাতে কাম'। গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার ওড়াকাঁন্দি-তে হরিচাঁদ ঠাকুরের ঠাকুরবাড়ি অবস্থিত। স্থানটি গোবরা-কাশিয়ানী একক ডিজেল রেললাইনের ছোট বাহিরবাগ স্টেশন থেকে ৮ কিমি উত্তর-পূর্বে।
প্রতি বছর চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথীতে ঠাকুর বাড়িতে মহাবারুনি স্নান ও মতুয়া মহামেলা হয়। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁর ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ি ও মতুয়া ধাম বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। মতুয়া ধাম ঠাকুরনগর মতুয়া স্টেশন থেকে ১ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। প্রতিবছর চৈত্র মাসে মতুয়া সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ও তার কনিষ্ঠপুত্র শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের আদর্শে মতুয়া ধামে মতুয়া মহামেলা বসে।

ফেরিওয়ালা: সত্যনন্দীর পরিচিতি

সত্যনন্দীর ফেরিওয়ালা। সত্যনন্দী ফেরিওয়ালার শত জনমের প্রেম। ১৩ কোটি জীবের যোনি ভ্রমণ করে বিভিন্ন রুপে বারবার ফিরে পৃথিবীর বুকে ফিরে আসা ফেরি...

উপমহাদেশের স্থাপত্য কলা বিশ্ব সেরা। ২য় পর্ব

এরই মধ্যে ট্রাভাঙ্কোরের রাজ পরিবারের আপিলের কারণে সুপ্রিম কোর্ট আবার বি ভল্টের দরজা খোলার সিদ্ধান্তকে স্থগিত করে দেয় ২০১২ সালের মধ্যে এ, সি, ডি, ই এবং এফ ভল্টের দ্রব্যসামগ্রীর তালিকাকরণের কাজ শেষ হয়। ভল্ট বি, জি এবং এইচ এরপর আর খোলা হয় নি। ভল্ট বি এর মত জি এবং এইচ চিহ্নিত ভল্ট দুটিও এভাবে শত শত বছর ধরে খোলা হয় নি বলে বিশ্বাস করা হয়। মন্দিরের যে ভল্টগুলো খোলা হয়েছে সেগুলোতে রক্ষিত সম্পদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। তবে এই তালিকার সম্পূর্ণ বিবরণী প্রকাশ করা হয় নি। পত্রিকার রিপোর্ট থেকে কী কী সম্পদ সেখানে ছিল তার একটি ধারণা পাওয়া যায়। ভল্ট ‘সি’ তে রয়েছে ১৪৬৯ ধরণের এবং ভল্ট ‘ডি’ তে রয়েছে ৬১৭ ধরণের দ্রব্যসামগ্রী। ভল্ট ‘ই’ এবং ভল্ট ‘এফ’ এ রয়েছে ৪০ ধরণের দ্রব্যসামগ্রী। আর কেবলমাত্র ভল্ট ‘এ’ তেই রয়েছে ১ লক্ষ ২ হাজার ধরণের দ্রব্যসামগ্রী।আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এই পাঁচটি ভল্টের সম্পদের সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ না করা হলেও, কমিটির সদস্য ও অন্যান্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী করা পত্রিকার রিপোর্ট থেকে সেখানে বিদ্যমান অজস্র ধন দৌলতের মধ্যে কিছু কিছু সম্পদের বর্ণনা জানা যায়। এই ভল্টের সম্পদের মধ্যে আছে,সাড়ে ৩ ফুট দীর্ঘ একটি স্বর্ণের বিষ্ণুমূর্তি যাতে খচিত আছে হীরা ও রুবিসহ মূল্যবান রত্ন পাথর। স্বর্ণের তৈরি একটি সিংহাসন যাতে অন্তত সাড়ে ৫ মিটার দীর্ঘ একটি মূর্তি স্থাপন করা যায়। সিংহসনের গায়ে খচিত আছে শত শত হীরা ও অন্যান্য রত্ন পাথর।সাড়ে ৫ মিটার লম্বা একটি স্বর্ণের চেইন, ৫০০ কেজি ওজনের একটি স্বর্ণের স্তুপ, ৩৬ কেজি ওজনের একটি পর্দার মত আবরণী, রত্নখচিত স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে বানানো ১,২০০ টি চেইন।স্বর্ণের জিনিসপত্র, নেকলেস, মুকুট, হীরা, রুবি, নীলকান্তমণি, পান্না, রত্ন পাথর ও মূল্যবান ধাতব দ্রব্যাদি ভর্তি কয়েকটি বস্তা।দেবমূর্তির শরীর আচ্ছাদনের জন্য প্রায় ৩০ কেজি ওজনের স্বর্ণের আবরণ। স্বর্ণ নির্মিত নারকেলের মালা যাতে খচিত আছে রুবি ও পান্না। ১৮ শতকের নেপোলিয়নের আমলের মুদ্রা। রোমান সাম্রাজ্যের কয়েক হাজার মুদ্রা। খ্রিস্টপূর্ব ২০০ সালের ১,৯৫০০০ টি স্বর্ণমুদ্রা যেগুলোর ওজন সব মিলিয়ে ৮০০ কেজি অন্তত ৩টি (বিভিন্ন রিপোর্টে বিভিন্ন সংখ্যার উল্লেখ আছে) সম্পূর্ণ স্বর্ণ নির্মিত আর হীরা ও অন্যান্য রত্ন খচিত রাজমুকুট। কয়েকশ স্বর্ণের চেইন। কয়েক হাজার স্বর্ণের পট ও জার। সম্পূর্ণ বিবরণী প্রকাশ করা হয় নি তাতেই এই অবস্থা, প্রকাশিত হলে আরও কী কী পাওয়া যেতে পারে তার পুরোটা অনুমান করা হয়ত কোনো মানুষের পক্ষেও সম্ভব নয়। শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের এই বিপুল পরিমাণ ধন সম্পত্তি কোথা থেকে এল এমন প্রশ্ন তো আছেই। বিশ্বাস করা হয়, হাজার হাজার বছর ধরে মন্দিরের দেবতার উদ্দেশ্যে দান করা সম্পদগুলোই জমা হয়ে আছে ভূগর্ভস্থ ভল্টে। ভারতের বিভিন্ন সময়ের শাসনকারী রাজপরিবারগুলো এখানে দান করেছে। মেসোপটেমিয়া, গ্রিস, রোম, জেরুজালেম হতে শাসকবৃন্দ ও বণিকেরাও ভারতবর্ষে এসে মন্দিরে দান করেছে। এরপর ঔপনিবেশিক শাসনের সময়েও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছে দানের সামগ্রী।অনেক গবেষকও মতামত দিয়েছেন, এই সম্পদ হাজার বছরের অর্জন। দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বর্ণের খনি ছিল। সুমেরীয় আমলে মালাবার অঞ্চলে ছিল ব্যবসা বাণিজ্যের কয়েকটি কেন্দ্র। সেই সূত্রে স্বর্ণ ও সম্পদ মন্দিরের কাছাকাছি স্থানেই ছিল যেখান থেকে তা মন্দিরে অর্পিত হতে পারে দেবতার নৈবদ্য হিসেবে। ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে টিপু সুলতান সহ অনেকের আক্রমণের মুখে পালিয়ে এসে এই মন্দিরে আশ্রিতদের ধন সম্পদও এখানে লুকিয়ে রাখা হত নিরাপদ জায়গা হিসেবে। প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র নাগাস্বামী এ ব্যাপারে জানান, কেরালার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এই মন্দিরের দেবতার উদ্দেশ্যে নৈবদ্য হিসেবে ধন সম্পদ দেয়ার রেকর্ড পাওয়া যায় ইতিহাসের বিভিন্ন দলিল থেকে। মহারাণী গৌরী লক্ষ্মী বাঈ এর শাসনামলে কেরালার কয়েকশ মন্দিরের অব্যবস্থাপনার কারণে এগুলোকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়। এসব মন্দির থেকে অনেক স্বর্ণালংকার সরিয়ে নিয়ে রাখা হয় শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরে। ১৭৭৬ থেকে ১৭৯২ সাল পর্যন্ত ট্রাভাঙ্কোর রাজ্যে আশ্রয় নেয় প্রায় বারো জনের মত হিন্দু রাজা যারা টিপু সুলতানের বাহিনীর কাছে পরাজিত হওয়ার ভয়ে পালিয়েছিলেন। পালানোর সময় তারা যত পারেন ধন সম্পদ নিয়ে এসেছিলেন এবং দান করেছিলেন পদ্মনাভস্বামী মন্দিরে। ব্রিটিশদের নিকট টিপু সুলতানের পরাজয়ের পর এই রাজারা তাদের এলাকায় ফিরে যাবার পরেও তারা এবং তাদের বংশধরেরা এই মন্দিরে দান করেছিলেন। এছাড়া মন্দিরের ভক্ত ধনী ব্যবসায়ী ও জমিদারদের দান তো ছিলই। প্রাচীন মালায়লাম ও তামিল ইতিহাসের এক বিশাল ভাণ্ডার হল ‘কজনপত্র’ বা তালপাতায় লিখিত ইতিহাস। এমন ৩,০০০ টি বান্ডেল আর্কাইভে সংরক্ষিত রয়েছে, যার প্রতিটি বান্ডেলে রয়েছে কয়েক হাজার তালপাতা। সেখানে লিখিত আছে হাজার বছর ধরে শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরে স্বর্ণ ও মূল্যবান দ্রব্যাদি নৈবদ্য প্রদান করার তথ্য। এর মাত্র অল্প কিছু পাতা এখনো গবেষণা করা হয়েছে। বাকিগুলো থেকে তথ্য উদ্ধার করা গেলে হয়ত জানা যাবে মন্দিরের বিপুল ধনভাণ্ডারের উৎসের ইতিহাস। ১৯৩৩ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত এমিলি গিলিক্রিস্ট হ্যাচ নামক একজন লেখিকার ‘Travancore: A Guide Book for the Visitor’ বইয়ে উল্লেখ আছে, ১৯৩১ সালে রাজা চিথিরা থিরুনাল বলরাম ভার্মার আদেশে ‘বি’ ভল্টের একেবারে বাইরের অংশটির দরজা একবার খোলা হয়েছিল। তিনি আরও লিখেন, এর দুই যুগ আগে ১৯০৮ সালে রাজ্যের অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন দেখা দেওয়ায় এই ভল্টটি খুলে সেখানকার সম্পদ কাজে লাগানোর কথা চিন্তা করা হয়েছিল। একদল লোক আলো হাতে ভল্টে প্রবেশের চেষ্টা করে। এরপর কোবরা বা গোখরো সাপের আক্রমণে পড়ে প্রাণ বাঁচানোর জন্য তারা সেখান থেকে পালিয়ে আসে।
যাই হোক, আদালতের নিযুক্ত ‘এমিকাস কিউরি’ বা ‘আদালতের বন্ধু’ হিসেবে আইনজীবী গোপাল সুব্রামানিয়াম ২০১৪ সালে তার প্রদত্ত রিপোর্টে যথাযথ ধর্মীয় রীতি পালনের পর এই ‘বি’ ভল্টটি আবার খোলার পরামর্শ দেন। উপরে যে ধনসম্পদের একাংশের কিছু বর্ণনা দেয়া হয়েছে সেগুলো ছিল তালিকাকৃত পাঁচটি ভল্টের সম্পদের অংশ। এই পাঁচটি ভল্টের মোট সম্পদের যেগুলোর আর্থিক মূল্য প্রায় ২,২০০ কোটি মার্কিন ডলার। ‘বি’ ভল্টে কী এমন আছে যার জন্য এত দুর্ভেদ্য সেই ভল্ট? ট্রাভাঙ্কোরের রাজ পরিবারের ১৮৮০ সালের ইতিহাস থেকে একটি নির্ভরযোগ্য তথ্য জানা যায় ‘বি’ ভল্টের সম্পদের ব্যাপারে। সে তথ্য অনুসারে, সেই আমলে এই ভল্ট এর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ১২ হাজার কোটি রুপি। বর্তমানে স্বর্ণের দাম এবং মুদ্রাস্ফীতি হিসেব করে সেই মূল্য কততে দাঁড়িয়েছে জানতে চান? ৫০ ট্রিলিয়ন বা ৫০ লক্ষ কোটি রুপি, আর আন্তর্জাতিক হিসেবে, ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার! বাংলাদেশের টাকায় কত হয় সেটা আপনিই হিসেব করুন। আর এসব সম্পদের সাংস্কৃতিক-ঐতিহাসিক মূল্য তো মানুষের হিসেবের বাইরে। ইতিহাসের কিছু সম্পদের হিসেব দিলে হয়ত এই মন্দিরের পৃথিবীর সবচেয়ে সম্পদশালী প্রতিষ্ঠানের খেতাবটা বোঝা যাবে। সম্রাট আকবর, জাহাঙ্গীর ও শাহজাহানের আমলের মুঘল রাজকোষের সবচেয়ে রমরমা সময়ে সেখানে ছিল সাত টন স্বর্ণ, প্রায় ৩৭ কেজি অপরিশোধিত হীরা, প্রায় ৪৫ কেজি রুবি ও ৪৫ কেজি পান্না আর প্রায় ২৭২ কেজি মুক্তা! আজকের যুগের হিসেব অনুসারে, মুঘল আমলের জিডিপি সবচেয়ে বেশি ছিল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে, প্রায় ৯ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। ভাবুন তাহলে, সেটাও এই মন্দিরের সম্পদের তুলনায় কিছুই ছিল না, বিখ্যাত ব্রিটিশ ক্রাউন জুয়েলের মূল্যের হিসেব তো বাদই দিলাম। আজ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসের কোনো সময়ের কোনো ধনভাণ্ডারের আর্থিক মূল্য শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের সম্পদের সমান নয়। এই বিশাল সম্পদের বিবরণী লোকচক্ষুর সামনে চলে আসার পর এই মন্দিরের ধন সম্পদের মালিকানা কার তা নিয়ে যখন তুমুল আলোচনা চলছে সারা ভারত জুড়ে তখন ভারতের প্রায় ৪৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত। ঠিক সে সময় কেরালা রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী উমেন চাণ্ডি বলেন, “এই স্বর্ণ দেয়া হয়েছে দেবতার নৈবদ্য হিসেবে। এর মালিকানা মন্দিরের। সরকার মন্দিরের সম্পদের নিরাপত্তা রক্ষা করবে ট্রাভাঙ্কোরের রাজ পরিবার, মন্দির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও মন্দিরের পুরোহিতদের সাথে আলোচনা করে।” এই সম্পদ মন্দিরের মালিকানার কিনা সেই বিতর্কের এক পর্যায়ে প্রখ্যাত আইনজ্ঞ ভি আর কৃষ্ণ আয়ার বলেন, “দেবতার সম্পদের মালিকানা জনগণের, রাজার নয়। হিন্দু কিংবা কোনো নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর এই সম্পদের মালিক এমন বলাটা অর্থহীন। ধনীরা নয় বরং দরিদ্র এবং যাদের অর্থের প্রয়োজন আছে তারা যাতে এই সম্পদ থেকে উপকৃত হয় তেমন ব্যবস্থা করা দরকার। ইতিহাসের কত চড়াই উৎরাই সময়ে হয়ত কোন বিপদ থেকে রক্ষা পাবার উদ্দেশ্যে কত বিশ্বাসী মানুষ দেবতার চরণে সম্পদ অর্পণ করেছিলেন। কেউবা হয়ত তার সমৃদ্ধি আরও স্থায়ী করার জন্য, কেউবা কেবলই ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে তাদের সম্পদ দিয়েছিলেন মন্দিরের ভাণ্ডারে। সেই সমস্ত সম্পদ নিয়ে আজকের এই বিপুল ধনরাশি। কিন্তু এই সম্পদ যদি মানুষের কাজে না লাগে তাহলে তার এত এত আর্থিক মূল্যের সত্যিকারের ‘মূল্য’টাই বা কী? মানুষের সমাজে অমানবিক জীবন বজায় রেখে কি উপাসনালয়ের ধনভাণ্ডারের নিরাপত্তা বিধান চলতে পারে? সাম্যবাদী কবিতায় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম উচ্চারণ করেছিলেন, “মিথ্যা শুনিনি ভাই, এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই।” মন্দির হোক, কিংবা মসজিদ, মানুষের হৃদয়ের দাবি শোনার জন্যই তো ধর্ম!সৌজন্যে রোর বাংলা 

নীশিথ সূর্যের দেশ।

ফেরিওয়ালাঃ সর্ব উত্তরে মানুষের বসবাসের স্থানের নাম প ২৩ তারিখ পর্যন্ত বিরতিহীন দিনের আলো দেখা যায়। স্থানীয়রা এই প্রাকৃতিক বিষয়ের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে। তবে, দর্শনার্থীরা প্রায়শই দীর্ঘ সময় আলোতে থাকার কারণে ক্লান্তি, নিদ্রাহীনতা এবং সময়কেন্দ্রিক বিভ্রান্তিতে পড়ে থাকে। নরওয়ে বছরের আট মাস বরফের নিচে ঢাকা থাকে। বছরের দুই মাস এখানে সূর্য ওঠে না। নভেম্বরের ২১ তারিখ থেকে জানুয়ারির ২১ তারিখ পর্যন্ত সময়টাকে তাই ডার্ক পিরিয়ড বলাআরয়। এই সময় আকাশে নর্দার্ন লাইট বা অরোরা বুরিয়াল দেখা যায়। আকাশে লাল, সবুজ রঙের আলোর খেলা। এই অরোরা দেখতে অনেক পর্যটক এই সময়ে এখানে আসেন। আর বছরের দুই মাস এখানে আবার সূর্য অস্ত যায় না। মে মাসের ২১ তারিখ থেকে জুলাইয়ের ২১ তারিখ। এই সময়টাকে বলা হয় মিডনাইট সানের সময়। প্রাকৃতিক এই ঘটনাটিকে হোয়াইট নাইট বা শ্বেতরাত্রি বলেও উল্লেখ করা হয়। একটানা সূর্যের আলো বিদ্যমান থাকে এবং রাতের অন্ধকারের পরিবর্তে আকাশে গোধূলির আলো ফুটে থাকে। সত্যি অদ্ভুত জায়গা। তবে সামারের সময় যদি আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে এখানকার প্রকৃতি এক অদ্ভুত সৌন্দর্য ধারণ করে। চোখ ধাঁধান সুন্দর। শুধুই কি মধ্যরাতে সূর্য দেখতেই নরওয়ে যাবেন? আরো আছে অনেক বিষয়। দেশটি ছবির চেয়ে সুন্দর। পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন দেশ। সবাই যেন শান্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব করেই চলছে। কোথাও কোন অপরাধের দেখা পাওয়া ভার। মানুষগুলো শান্ত ও খুবই মানবিক। একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে চলাই যাদের দিনান্তের ঘটনা। বিশ্বে শান্তির দেশের মধ্যে এ দেশটি সবার সেরা। নরওয়ে বিশ্বের সবচেয়ে শান্ত জনপদ। দীর্ঘায়ু, শারীরিক সুস্থতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং সামাজিক সহায়তার জন্য জনগণ শান্তির আধারে বাস করেন। এ ছাড়াও নরওয়ের অপরাধ প্রবণতা একেবারে কম এবং এই দেশটি জীবন ধারনের জন্য নিরাপদ। সুন্দর প্রকৃতি, প্রচুর অর্থ নরওয়ের। এখানে অভিযোগ করার কিছু নেই। নরওয়ে বললে নোবেল শান্তি পুরস্কারের কথাও মনে আসে। রাজধানী অসলোতে রয়েছে ‘নোবেল পিস সেন্টার’৷ সেখানে শান্তিতে নোবেলজয়ীদের বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়। অসলোর গ্র্যান্ড হোটেলের ঝুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে দর্শকদের অভিনন্দন গ্রহণ করেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীরা। আপনি যদি অভুক্ত হন এবং টাকা না থাকে তাহলে যে কোন খাবারের দোকানে গেলেই খাবার পাবেন। কেননা আপনার খাবারের দাম আগেই অন্য একজন মিটিয়ে গেছেন। অথচ আপনার সঙ্গে তার পরিচয় নেই। কোন দিন মুহূর্তের জন্য দেখাও হয়নি। এই দৃশ্য অহরহ দেখতে পাবেন বিভিন্ন রেস্তোরায়। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক এই পরাবাস্তব দৃশ্য অবলোকন করতে নরওয়েতে আসে। বিশ্বজুড়ে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান এই দেশটির পরিচিতি মূলত মধ্যরাতের সূর্যের দেশ হিসেবে থাকলেও এটি ছাড়াও এই দেশটির বিশেষত্ব হিসেবে রয়েছে এর বিস্ময়কর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। রুপকথার গল্পের মত সুন্দর সব সমুদ্রখাত, অরোরা বোরিয়ালিস বা উত্তরের আলো, তুষার ঢাকা বিস্তৃত মালভুমি আর অবিশ্বাস্য সুন্দর সব পর্বতমালা। নরওয়ের প্রাণী বৈচিত্র্য অসাধারন এবং অবিশ্বাস্য। এখানে রয়েছে তুষার শুভ্র সুমেরু শিয়াল থেকে শুরু করে বল্গা হরিণ, তিমি, সাদা লেজ যুক্ত ঈগল, মেরু ভালুক, সিন্ধু ঘোটক এবং আরও অনেক ধরনের প্রাণী। আর্কটিক ল্যান্ডস্কেপ, উত্তরে বনাঞ্চল আর জটিল উপকূল ভূমির কারণে উত্তর নরওয়েতে সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় বন্যপ্রাণী দেখতে পাওয়া যায়। নরওয়ের সর্ব উত্তরে সুমেরু বৃত্তের নিকট অবস্থিত সালবার্ড দ্বীপপুঞ্জে প্রায় ৩০০০ শ্বেত ভালুক রয়েছে। এছাড়াও সালবার্ড এ সিন্ধু ঘোটক দেখতে পাওয়া যায় যা ইউরোপের অন্য কোনো স্থানে দেখতে পাওয়া দুষ্কর। এগুলোকে প্রায়ই ফিয়র্ড এর তীরে দেখতে পাওয়া যায়, যা দর্শনার্থীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এমনও স্থান রয়েছে যেখানে টানা ৭০ দিনেরও বেশি সময় ধরে সূর্যাস্ত যায় না। কল্পনাকেও হার মানানো এইসব জায়গাতে স্থানীয় লোকেরাও দিন ও রাতের হিসাবে গোলমাল করে ফেলে। ভ্রমণ পিপাসু ব্যক্তিরা এইসব স্থানে গিয়ে একপ্রকার দিশেহারা হয়ে পড়েন। নরওয়ে দেখা যাবে এই দৃশ্যপট। যেখানে টানা ৭৬ দিনেও সূর্যাস্ত হয় না। আজ আপনাদের সে দেশের গল্পই বলছি। উত্তর গোলার্ধের সুমেরুবৃত্তে অবস্থিত নরওয়েকে বলা হয় নিশীত সূর্যের দেশ। মে মাস থেকে শুরু করে জুলাই মাসের শেষ পর্যন্ত প্রায় টানা ৭৬ দিন এই অঞ্চলে সূর্য ডোবে না। এই সময় প্রতিদিন প্রায় ২০ ঘণ্টা এই দেশের প্রায় সব স্থানে ঝকঝকে সূর্যের আলো দেখা যায়। বাকি সময়টায় আলো তেজ কমে গেলেও দিগন্তে সূর্যের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয় না। এই কারণেই দেশটির নামকরণ হয় ‘নিশীত সূর্যের দেশ’ নরওয়ে এবং ইউরোপের সর্ব উত্তরে মানুষের বসবাসের স্থানের নাম ‘সাভালবার্ড’। এখানে এপ্রিলের ১০ তারিখ থেকে আগস্টের ২৩ তারিখ পর্যন্ত বিরতিহীন দিনের আলো দেখা যায়। স্থানীয়রা এই প্রাকৃতিক বিষয়ের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে। তবে, দর্শনার্থীরা প্রায়শই দীর্ঘ সময় আলোতে থাকার কারণে ক্লান্তি, নিদ্রাহীনতা এবং সময়কেন্দ্রিক বিভ্রান্তিতে পড়ে থাকে। নরওয়ে বছরের আট মাস বরফের নিচে ঢাকা থাকে। বছরের দুই মাস এখানে সূর্য ওঠে না। নভেম্বরের ২১ তারিখ থেকে জানুয়ারির ২১ তারিখ পর্যন্ত সময়টাকে তাই ডার্ক পিরিয়ড বলা হয়। এই সময় আকাশে নর্দার্ন লাইট বা অরোরা বুরিয়াল দেখা যায়। আকাশে লাল, সবুজ রঙের আলোর খেলা। এই অরোরা দেখতে অনেক পর্যটক এই সময়ে এখানে আসেন। আর বছরের দুই মাস এখানে আবার সূর্য অস্ত যায় না। মে মাসের ২১ তারিখ থেকে জুলাইয়ের ২১ তারিখ। এই সময়টাকে বলা হয় মিডনাইট সানের সময়। প্রাকৃতিক এই ঘটনাটিকে হোয়াইট নাইট বা শ্বেতরাত্রি বলেও উল্লেখ করা হয়। একটানা সূর্যের আলো বিদ্যমান থাকে এবং রাতের অন্ধকারের পরিবর্তে আকাশে গোধূলির আলো ফুটে থাকে। সত্যি অদ্ভুত জায়গা। তবে সামারের সময় যদি আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে এখানকার প্রকৃতি এক অদ্ভুত সৌন্দর্য ধারণ করে। চোখ ধাঁধান সুন্দর। শুধুই কি মধ্যরাতে সূর্য দেখতেই নরওয়ে যাবেন? আরো আছে অনেক বিষয়। দেশটি ছবির চেয়ে সুন্দর। পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন দেশ। সবাই যেন শান্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব করেই চলছে। কোথাও কোন অপরাধের দেখা পাওয়া ভার। মানুষগুলো শান্ত ও খুবই মানবিক। একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে চলাই যাদের দিনান্তের ঘটনা। বিশ্বে শান্তির দেশের মধ্যে এ দেশটি সবার সেরা। নরওয়ে বিশ্বের সবচেয়ে শান্ত জনপদ। দীর্ঘায়ু, শারীরিক সুস্থতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং সামাজিক সহায়তার জন্য জনগণ শান্তির আধারে বাস করেন। এ ছাড়াও নরওয়ের অপরাধ প্রবণতা একেবারে কম এবং এই দেশটি জীবন ধারনের জন্য নিরাপদ। সুন্দর প্রকৃতি, প্রচুর অর্থ নরওয়ের। এখানে অভিযোগ করার কিছু নেই। নরওয়ে বললে নোবেল শান্তি পুরস্কারের কথাও মনে আসে। রাজধানী অসলোতে রয়েছে ‘নোবেল পিস সেন্টার’৷ সেখানে শান্তিতে নোবেলজয়ীদের বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়। অসলোর গ্র্যান্ড হোটেলের ঝুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে দর্শকদের অভিনন্দন গ্রহণ করেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীরা। আপনি যদি অভুক্ত হন এবং টাকা না থাকে তাহলে যে কোন খাবারের দোকানে গেলেই খাবার পাবেন। কেননা আপনার খাবারের দাম আগেই অন্য একজন মিটিয়ে গেছেন। অথচ আপনার সঙ্গে তার পরিচয় নেই। কোন দিন মুহূর্তের জন্য দেখাও হয়নি। এই দৃশ্য অহরহ দেখতে পাবেন বিভিন্ন রেস্তোরায়।প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক এই পরাবাস্তব দৃশ্য অবলোকন করতে নরওয়েতে আসে। বিশ্বজুড়ে স্ক্যান্ডিনেভয়ান এই দেশটির পরিচিতি মূলত মধ্যরাতের সূর্যের দেশ হিসেবে থাকলেও এটি ছাড়াও এই দেশটির বিশেষত্ব হিসেবে রয়েছে এর বিস্ময়কর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। রুপকথার গল্পের মত সুন্দর সব সমুদ্রখাত, অরোরা বোরিয়ালিস বা উত্তরের আলো, তুষার ঢাকা বিস্তৃত মালভুমি আর অবিশ্বাস্য সুন্দর সব পর্বতমালা। নরওয়ের প্রাণী বৈচিত্র্য অসাধারন এবং অবিশ্বাস্য। এখানে রয়েছে তুষার শুভ্র সুমেরু শিয়াল থেকে শুরু করে বল্গা হরিণ, তিমি, সাদা লেজ যুক্ত ঈগল, মেরু ভালুক, সিন্ধু ঘোটক এবং আরও অনেক ধরনের প্রাণী। আর্কটিক ল্যান্ডস্কেপ, উত্তরে বনাঞ্চল আর জটিল উপকূল ভূমির কারণে উত্তর নরওয়েতে সবচেয়ে বচিত্র্যময় বন্যপ্রাণী দেখতে পাওয়া যায়। নরওয়ের সর্ব উত্তরে সুমেরু বৃত্তের নিকট অবস্থিত সালবার্ড দ্বীপপুঞ্জে প্রায় ৩০০০ শ্বেত ভালুক রয়েছে। এছাড়াও সালবার্ড এ সিন্ধু ঘোটক দেখতে পাওয়া যায় যা ইউরোপের অন্য কোনো স্থানে দেখতে পাওয়া দুষ্কর। এগুলোকে প্রায়ই ফিয়র্ড এর তীরে দেখতে পাওয়া যায়, যা দর্শনার্থীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা

WHAT IS NUMBER

ফেরিওয়ালা গণিত শুধু কি একটি বিষয় মাত্র! না তা হতে পারেনা। গণিত হলো একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা বা যোগাযোগ মাধ্যম। এর নিজস্ব বর্ণ আছে, আছে নিজস্ব কিছু ব্যকারণের মত নিজস্ব নীতিমালা। আছে নিজস্ব কিছু সাহিত্যিক ভান্ডার এ কারণে গণিতকে শুধু একটি বিষয় বলে সীমাবদ্ধ করে রাখার কোন যুক্তিগত কারন আমি খুজে পাইনি। যেহেতু এটা শুধুমাত্র একটি বিষয় হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে একে জটিল করার কোন মানেই হয়না। বরং এটাকে একটা ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে এর প্রতি ভীতি দূর করা যাবে। যেহেতু এর ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা নেই এবং সমাজে বসবাস করতে এটি প্রতিনিয়ত প্রয়োজন তাই এটি একটি অতি আবশ্যকীয় ভাষা। গণিতের ভিত্তি বাইনারীর মত অর্থাৎ শূণ্য (০) এবং গণিতের প্রতিটি বর্ণের জন্ম এই শুন্য থেকে। এবং এটা সেই শুন্য যার দুটি নির্দৃষ্ট বিন্দু একত্রে মিলিত হয়ে নিজেকে বৃত্ত বলে। এবং বৃত্ত হবার সময় এর সব কিছু সমান দুরত্ত্ব বজায় রাখে অর্থাৎ ব্যস সমান হয়। আর যখন সে নিজেকে ভাষা হিসাবে দাবী করে তার সংগা হয় এমন যে "দ্বিমুখী শুন্য আকৃতির বৃত্তের বন্ধন ছিন্ন হওয়ার কারনে যে নিদৃষ্ট আকৃতি অর্জন করে সেটা হলো গাণিতিক বর্ণ যেটাকে  সংখ্যাও বলা হয়।" অর্থাৎ বন্ধন ছিন্ন হওয়ার পরে অর্জিত আকৃতিই হলো সংখ্যা। গাণিতিক বর্ণের প্যারেন্ট বর্ণ বা মূল হলো শুন্য এবং বাকি ১ থেকে ৯ পর্যন্ত চাইল্ড বর্ণ। কারণ ১ থেকে ৯ পর্যন্ত বর্ণের যে অবয়ব তা শূন্য এর অবয়বের সাথে যথেষ্ট মিলে যায়। এ কারণেই বলি গণিৎ শুধুমাত্র বিষয় নয় বরং গণিৎ একটি ভাষা।

উপমহাদেশের স্থাপত্য কলা বিশ্বসেরা পর্ব ১

ফেরিওয়ালা
কল্পনার অতীত যার সম্পদ ভাণ্ডার স্বর্ণ মন্দির! যে মন্দিরের নিচের গোপন ভল্টে লুকানো আছে অকল্পনীয় এক ধন সম্পদের বিশাল ভাণ্ডার! ভারতের কেরালা রাজ্যের থিরুভানানথাপুরাম শহরে অবস্থিত শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরকে বলা হয় পৃথিবীর ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত যত ধরণের প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পদশালী প্রতিষ্ঠান, সবচেয়ে ধনী ধর্মীয় উপাসনালয় তো বটেই।এই মন্দিরের নিচের ভূগর্ভস্থ ৮ টি ভল্টের মধ্যে রয়েছে অজস্র রকমের ধন সম্পদের সমাহার। এর মধ্যে ৩ টি ভল্ট খোলা হয় নি, তাই সেগুলোতে কী আছে তার সঠিক তালিকা নেই। অন্য পাঁচটিতে রয়েছে স্বর্ণ, হীরা, রুবি, পান্না, নীলা সহ অমূল্য সব দুর্লভ রত্ন পাথর, এসব মূল্যবান ধাতু থেকে থেকে নির্মিত রত্ন খচিত মূর্তি, অলংকার, তৈজসপত্র সহ নানা রকম দ্রব্যাদি, প্রাচীন মুদ্রা ইত্যাদি অসংখ্য রকমের মূল্যবান সম্পদরাশি। আর এই ৫টি ভল্টের সম্পদের মিলিত আর্থিক মূল্য হিসেবে করলে সেটি দাঁড়ায় ২,২০০ কোটি মার্কিন ডলার! ঐতিহাসিক বিবেচনায় যেগুলো অমূল্য। যে ভল্টগুলো খোলা হয় নি তাদের মধ্যে একটি ভল্টের সম্পদের পরিমাণের একটি ধারণা পাওয়া যায় ইতিহাসের কিছু বর্ণনা ও রেকর্ড থেকে। সেটা এখন বললে লেখার শুরুতেই মাথা ঘুরতে পারে। সেই তথ্যটি জানবেন এই লেখা থেকে আঠারো এবং উনিশ শতকে কেরালার মধ্য ও দক্ষিণ অংশ নিয়ে গঠিত ট্রাভাঙ্কোর রাজ্যের শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরটি ষোল শতকে স্থাপিত হয়েছিল বলে অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন। তবে এর আগে থেকেই এখানে মন্দির থাকার অনেক বর্ণনা পাওয়া যায় ইতিহাসে, সে অনুসারে এর স্থাপনকাল সঠিকভাবে জানা যায় না। ট্রাভাঙ্কোর রাজ্য সৃষ্টির অনেক অনেক আগে খ্রিস্টপূর্ব ২০০ সালের মুদ্রাও রক্ষিত আছে মন্দিরের ভল্টের ভেতরে, যদিও তা পরবর্তী সময়ে নৈবদ্য হিসেবে আসতে পারে এমন ধারণাও রয়েছে। ব্রাহ্ম, মাৎস্য, বরাহ, স্কন্দ, পদ্ম, বায়ু, ও ভগবত এই পুরাণগুলোতে এবং মহাভারতে এই স্থানের মন্দিরের উল্লেখ রয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ সাল থেকে খ্রিস্টের জন্মের ৩০০ সালের মধ্যে রচিত প্রাচীন তামিল সাহিত্যের সঙ্গম আমল নামক সময়কালের রচনায় এই মন্দিরকে ‘স্বর্ণমন্দির’ রূপে আখ্যায়িত করা হয়েছে এর বিপুল সম্পদের কারণে। মন্দিরের নির্মাণ সংক্রান্ত রেকর্ডে উল্লেখ আছে, কলিযুগ শুরু হবার পর দিবাকর মুনি এই মন্দিরটির নির্মাণকাজ শুরু করেন এবং এটি তৈরি হতে সময় লেগেছিল প্রায় ৯৬৪ দিন। অনেক ইতিহাসবিদের মতে এই মন্দিরের নাম স্বর্ণ মন্দির হবার কারণ, নির্মাণের সময় থেকেই এটি বিপুল পরিমাণে সম্পদশালী ছিল। অনেক প্রাচীন তামিল সাহিত্য রচনায় এমনকি খ্রিস্টীয় নবম শতকের ভারতীয় কবিতায় এই মন্দির ও এর শহরের দেয়াল স্বর্ণনির্মিত এমন আখ্যা দেয়া হয়েছে। কোন কোন রচনায় এই মন্দিরকে অভিহিত করা হয়েছে স্বর্গ হিসেবে। আঠারো শতকের মাঝামাঝিতে ট্রাভাঙ্কোরের রাজা হন আনিঝাম থুরিনাম যিনি পরিচিত মার্তণ্ড ভার্মা হিসেবে। মার্তণ্ড ভার্মা ১৭৫০ সালে ট্রাভাঙ্কোর রাজ্যটি দেবতা পদ্মনাভস্বামীর পদচরণে সমর্পণের ঘোষণা দেন। তার পরবর্তী বংশধর ‘পদ্মনাভ দাস’ হিসেবে ট্রাভাঙ্কোর শাসন করবে, দেবতার নিকট এমন প্রতিশ্রুতির ঘোষণাও দেন তিনি। সেই থেকে ট্রাভাঙ্কোরের রাজ পরিবারের পুরুষ সদস্য ও রাজারা নামের আগে শ্রী পদ্মনাভ দাস উপাধি এবং নারী সদস্যরা শ্রী পদ্মনাভ সেবিনী উপাধি ধারণ করে আসছেন। ২০১১ সালে মন্দিরের এই অসাধারণ রত্নখনির আবিস্কার ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে, কারণ পৃথিবীর ইতিহাসে এক জায়গা থেকেই এত পরিমাণ স্বর্ণনির্মিত দ্রব্য ও  রত্ন পাথরের সংগ্রহ আর কখনও খুঁজে পাওয়া যায় নি। দেবতা পদ্মনাভস্বামী এই মন্দিরের সমস্ত সম্পদের মালিক, এমনটাই বিশ্বাস করা হয়। মন্দিরটি পরিচালিত হয় একটি ট্রাস্টের মাধ্যমে যে ট্রাস্টের প্রধান ছিল ট্রাভাঙ্কোরের রাজ পরিবার। আইনজীবী টি পি সুন্দররাজন মন্দিরের অব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি মামলা করেন। ২০১১ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলার শুনানিতে নির্দেশ দেয় এই মন্দিরের ভূগর্ভস্থ ভল্টগুলোর সম্পদের তালিকা তৈরির। আর তার পর সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দির হয়ে উঠে এক মহা বিস্ময়ের নাম । মন্দির পরিচালনা কমিটি ছয়টি ভল্টের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানত। মন্দিরের পশ্চিম দিকে এর ‘গর্ভগৃহ’ অর্থ্যাৎ মন্দিরের পবিত্রতম স্থান বিবেচনা করা হয় যাকে সেই দেবমূর্তি রাখার স্থানটির খুব কাছেই মাটির নিচে এই ভল্টগুলো ছিল। তথ্য সংরক্ষণের জন্য ভল্টগুলোকে ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘ডি’, ‘ই’ এবং ‘এফ’ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। পরবর্তীতে তালিকা তৈরি করতে গিয়ে আরও দুটো ভল্ট আবিস্কৃত হয় যাদেরকে ‘জি’ এবং ‘এইচ’ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়।
চারটি ভল্ট, যেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে সি, ডি, ই এবং এফ দিয়ে, সেগুলো ছিল মন্দিরের পুরোহিতদের দায়িত্বে। প্রতি বছর অন্তত আটবার সেই ভল্টগুলো খোলা হত। ভল্টের বিভিন্ন জিনিস মন্দিরের উৎসব ও বিশেষ আয়োজনের সময় ব্যবহার করা হত। কাজ শেষে সেগুলো আবার রেখে দেয়া হত এই চারটি ভল্টে।ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী গঠিত কমিটির সদস্যরা ২০১১ সালের ৩০ জুন মন্দিরের নিচের ভল্টগুলো খুলতে যান। সেখানে ভল্টগুলোর প্রধান প্রবেশদ্বার খুলে প্রথমে তারা ভল্ট ‘এ’ তে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নেন। ভল্ট এ এর প্রবেশমুখেই তারা একটি লোহার গ্রিল দেখতে পান, সেটি খোলা হয়। এরপর আসে একটি ভারী কাঠের দরজা, সেটিও খোলা হয়। এরপর দরজাটি পেরিয়ে তারা যে স্থানে প্রবেশ করেন সেখানে মেঝেতে একটি গ্রানাইট স্ল্যাব মানে জমাটবাঁধা পাথরের স্ল্যাব দেখতে পান। সেটি সরিয়ে পাওয়া যায় পাঁচ বা ছয় ধাপের একটি সিঁড়ি। সিঁড়িটি পেরিয়ে নামার পর একটি ছোট অন্ধকার রুমে আসেন তারা। এখানেই রক্ষিত ছিল ‘এ’ ভল্টের অমূল্য সব ধন সম্পদ। সেগুলো গোটা রুম জুড়ে ছড়ানো অবস্থায় দেখেন তারা। কোনো কিছু সুন্দর করে গোছানো অবস্থায় ছিল না। ঝুড়ি, মাটি ও তামার পাত্র ভর্তি করে রাখা ছিল দামী দামী সব জিনিস। এক এক করে ভল্ট থেকে সমস্ত সম্পদ বাইরে নিয়ে এসে তালিকা প্রস্তুত করতে সময় লেগেছিল একটানা ১২ দিন। বিশ্বাস করা হয়, ‘বি’ চিহ্নিত ভল্টের মূল দরজাটি কয়েক শত বছর ধরে বন্ধই আছে। কমিটির সদস্যরা ২০১১ সালের জুলাইয়ে ভল্ট ‘বি’ তে প্রবেশের চেষ্টা করেন। প্রথমে তারা এর প্রবেশমুখে লোহার গ্রিল দেয়া দরজাটি খুলে ভেতরে ঢুকেন। এরপর দেখা যায় অত্যন্ত মজবুত ও ভারী কাঠের একটি দরজা। সেটিও খোলা হয়। এরপর আসে একটি লোহার দরজা। লোহার দরজায় গোখরো সাপের ছবি খোদাই করা আছে। ট্রাভাঙ্কোরের রাজপরিবার জানিয়েছিল, গোখরো সাপের ছবি খোদাই করা সেই দরজাটি খুললে একটি ভয়ঙ্কর ভবিষ্যৎবাণী ফলে যাবে। বিশ্বাস করা হয়, এই দরজাটি খুললে তা সারা পৃথিবীর উপর অত্যন্ত ভয়াবহ দুর্যোগ সৃষ্টি করবে। ৪ জুলাই তারিখে সাত সদস্যের কমিটি এখনই দরজাটি না খুলে এর আগে আরও কিছু বিশেষজ্ঞের সাথে আলাপ করার সিদ্ধান্ত নেন। ধর্মীয় রীতিতে দেবতা যাতে রুষ্ট না হন সেজন্য দরজাটি খোলার আগে ‘অষ্টমঙ্গল দেবপ্রশ্নম’ পালনের সিদ্ধান্ত নেন তারা। কিন্তু সেটি আর খোলা হয়ে উঠে নি। যার করা মামলার কারণে এই মন্দিরের বিষয়টি আদালতে এসেছিল কাকতালীয় ভাবে সেই আইনজীবী পি টি সুন্দররাজন মারা যান সেই মাসে। আর এই ঘটনার কারণে যারা এই দরজা খোলার বিপক্ষে ছিলেন তারা আরও শক্তভাবে বলতে লাগলেন যাতে দরজা খোলা না হয়। এরই মধ্যে ট্রাভাঙ্কোরের রাজ পরিবারের আপিলের কারণে সুপ্রিম কোর্ট আবার বি ভল্টের দরজা খোলার সিদ্ধান্তকে স্থগিত করে দেয় ২০১২ সালের মধ্যে এ, সি, ডি, ই এবং এফ ভল্টের দ্রব্যসামগ্রীর তালিকাকরণের কাজ শেষ হয়। 

রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থা ২

ফেরিওয়ালা ফেরিওয়ালা নিবেদিতঃ আমাদের রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম সমস্যা হলো আবদ্ধ শ্রেণীকক্ষ ও শিক্ষকের জড়তা। আমাদের যে পাঠ্য বইগুলো রয়েছে এবং সৃজনশীল যে শিক্ষা ব্যবস্থা তা কিন্তু উপযুক্ত যৌক্তিক নয়। সৃজনশীল পদ্ধতি তখন কার্যকর যখন পাঠ্যপুস্তক থাকবেনা। সৃজনশীল পদ্ধতির প্রয়োগ পাঠ্যবই সামনে রেখে সম্ভব নয় কারণ এতে শিক্ষক শিক্ষার্থী উভয়ই গতানুগতিক ধারা থেকে বের হতে পারেনা। যদি পাঠ্যবই না থাকত এবং শিক্ষকদের হাতে শুধু কারিকুলাম ধরিয়ে দেওয়া হতো তবে শিক্ষক যেমন উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে সৃজনশীলতার প্রয়োগ ও ব্যবহারে সচেষ্ট হতো তেমনি শিক্ষার্থী ভালভাবে বোঝার বা শেখার ক্ষেত্রে গবেষণা করতো। এবং তারাও সৃজনশীল মনোবৃত্তি নিয়ে বেড়ে উঠার সুযোগ পেত। প্রকৃতি শ্রেষ্ঠ শিক্ষক অথচ আমাদের নীতি নির্ধারনী কর্তৃপক্ষ শিশুদের বা শিক্ষকদের প্রকৃতির সাথে কোন সংস্পর্শই রাখেননি। রচিত পাঠ্যপুস্তক গুলোতে পর্যাপ্ত একটিভিটিজের সুযোগ থাকলেও তা প্রয়োগের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ নেই কারণ একটিভিটিজের জন্য উন্মুক্ত পরিবেশের প্রয়োজন হয়। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন যে এখানে পানিতে ডুবে গেলে কি করনীয় তা শেখানো হয়। কিন্তু পানিতে না যেন ডুবে যায় সে জন্য সাতার শেখানোর সুযোগ নেই। বৈদ্যুতিক সক পেলে করণীয় সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয় কিন্তু সক থেকে বাচার উপায় সম্বন্ধে শিক্ষা দেওয়া হয়না। শিশুদের শেখানো হয় কিন্তু শেখার প্রয়োজনীয়তা শেখানো হয়না। শিখনটুকু কি কাজে লাগবে তা শেখানো হয়না।

টেরাকোটা

ফেরিওয়ালাঃ 
                  টেরাকোটা একটি ল্যাটিন শব্দ: 'টেরা' অর্থ মাটি, আর 'কোটা' অর্থ পোড়ানো। মানুষের ব্যবহার্য পোড়ামাটির তৈরি সকল রকমের দ্রব্য টেরাকোটা নামে পরিচিত। আঠালো মাটির সঙ্গে খড়কুটো, তুষ প্রভৃতি মিশিয়ে কাদামাটি প্রস্তুত করা হয়। সেই মাটি থেকে মূর্তি, দৃশ্যাবলি তৈরি করে রোদে শুকিয়ে আগুনে পুড়িয়ে টেরাকোটা ভাস্কর্য তৈরি করা হয়। মানবসভ্যতার বিকাশকাল হতে পোড়ামাটির ভাস্কর্যের ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। সুমেরীয় সভ্যতা, ব্যাবীলনীয় সভ্যতা, মায়া সভ্যতায় এই শিল্পের প্রচলন ছিল।পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে মৌর্য সাম্রাজ্য, গুপ্ত সাম্রাজ্য-এর বহু টেরাকোটার নিদর্শন পাওয়া গেছে।পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহর টেরাকোটা শিল্পের জন্য বিখ্যাত।  ইতিহাস থেকে জানা যায়  ভারতবর্ষের সিন্ধু নদীর তীরে খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ বৎসর বা তার আগে বিকশিত সিন্ধু সভ্যতায় প্রচুর টেরাকোটার নিদর্শন পাওয়া গেছে। এই সব নিদর্শেনের মধ্যে রয়েছে নানা ধরনের পাত্র, দেবদেবীর মূর্তি, স্বস্তিকা চিহ্ন ইত্যাদি। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫০ অব্দের দিকে বাংলাদেশের উয়ারী-বটেশ্বর অঞ্চলে বিকশিত সভ্যতায় এই জাতীয় নমুনা পাওয়া গেছে। এই বিচারে বলা হয়, বহু আগে থেকেই বাংলাদেশের শিল্পীরা টেরাকোটা তৈরির কৌশল শিখেছিলেন। চতুর্দশ শতাব্দীর প্রাক কালে ইউরোপ এবং কলম্বিয়ান জনগোষ্ঠীর কাছে টেরাকোটা শুধু মাত্র সিরামিক হিসাবেই পরিচিত ছিল। প্রাচীনকালে এই পদ্ধতিতে নানাধরনের পাত্র, তাবিজ, ইট তৈরি করা হতো। যখন মহেঞ্জোদারোর (খৃষ্ট-পূর্ব ৩০০০-১৫০০) নগর-বসতি আবিষ্কৃত হয়,তখন ওখান থেকে কিছু পোড়া মাটির নারী দেহ ফলক খুঁজে পান খননকারীরা !দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দিরে পুঠিয়ার গোবিন্দ মন্দির পাহাড় পুর বৌদ্ধ বিহার সহ অনেক প্রাচীন স্থাপনায় টেরাকোটার অসংখ্য নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। বাংলাদেশের মন্দিরের গাত্র অলঙ্করণের জন্য একসময় টেরাকোটা অপরিহার্য উপকরণ ছিল। একই সূত্র ধরে মসজিদেও টেরাকোটা ব্যবহৃত হয়েছে। এর প্রস্তুত প্রনালী সম্পাদনায় প্রথমে কাদা দিয়ে কোনো অবয়ব তৈরি করা হয় তারপর রৌদ্রে শুকানো হয় এবং পরে তা আগুনে পুড়িয়ে মজবুত করা হয়। এই পদ্ধতিতে মাটির ফলকে কোনো শিল্পকর্ম উপস্থাপন করলে, তখন তাকে টেরাকোটা বলা হয়। মূলত টেরাকোটা সাংসরিক কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়। গৃহাদি অলঙ্করণ বা কোনো শৈল্পিক প্রদর্শনের জন্য টেরাকোটা তৈরি করা হয়। কিছু কুশলী শিল্পীরা টেরাকোটা তৈরি করে থাকেন। মসজিদ মন্দিরের গায়ে অলংকৃত টেরাকোটা দ্বারা অনেক ইতিহাসও বর্ণনা করা হয়েছে যার পাঠোদ্ধার করে লিপিবদ্ধ করা জরুরী। 

Naribaditto

নারী যাকে বলা হয় সৃষ্টির রহস্য যার মায়া ভেদ করে রহস্যা উন্মোচন করার সাধ্য কারো নেই। এই নারীর হৃদয় হচ্ছে রক্তের অতি কঠিন কনা গুলো দিয়ে তৈরী। অথচ তাদের মমতা এত বেশি যে পরিমাপের সাধ্য কারো নেই। নারী এমন একটি মমত্ব যেটা শুধু আপনজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনা এদের মমত্ব সকলের জন্যই বরাদ্দকৃত। একজন নারীকে শুধু নারী বললেই শেষ হয়ে যায়না। প্রতিটি পেশাজীবীর যে পেশাদারিত্ব থাকে একজন নারীকে সেই সকল পেশাজীবীর পেশাদারিত্বের জ্ঞ্যান দক্ষতা তাকে একজনমেই অর্জন ও প্রয়োগ করতে হয়।

আমার সত্যনন্দী

ফেরিওয়ালা জীবন চলার পথে হোচট খেয়েছে বার বার ভেংগে পড়তে গিয়েও ভেংগে পড়েনি, বারবার প্রতারিত হয়েছে আবেগের কারণে। চলার পথ ছিল বন্ধুর। পৃথীবিতে বিচরন কালে বার বার আকাশ মেঘে ঢেকে গিয়েছে নিজের ছায়াও সাথ ছেড়েছে তবুও একা হয়ে যায়নি ফেরিওয়ালা দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে ঘুরতে জুতোর সুখতলী ক্ষয়ে গেছে তবুও তার আশা গুলো ক্ষয়ে যায়নি। বার বার দংশিত হয়েছে সমাজের অসামাজিক হিংস্র পশু ও সরিসৃপ দ্বারা তবুও বিষবেদনায় নীল বা আঘাত জনিত লাল হয়ে যায়নি, কাপুরুষের মত বার বার মারা গিয়েছে তবুও দীর্ঘশ্বাস বন্ধ করেনি আবার ঘুরে দাড়ানোর প্রত্যায়ে ঘুরে দাড়িয়েছে নতুন উদ্দ্যমে শুধু সত্যনন্দীর একান্ত ইচ্ছায়। তার পথ চলার অবলম্বন যখন স্বার্থ আর মনুষত্বের দ্বন্দ প্রকট হয়ে মনুষত্ব পরাজিত তখন নি:স্বার্থ সত্যনন্দীর বস্তুহীন চাহিদা তাকে উৎসাহ যুগিয়েছে তুমি পারবে তোমাকে পারতেই হবে। তুমি না পারলে পরা;হবে বিবেক নামক প্রানপাখি। যখন পাশের মানুষগুলো স্বার্থের টানে হিংস্র পশুর গলায় আপোষের মালা সপে দিয়েছে ছাদনাতলায় দাঁড়িয়ে তখন আর কিই বা করার ছিল ফেরিওয়ালার শুধু সত্যনন্দীকে বুকে ধারন করে একাকী চলেছে অমসৃণ পৃথীবির পথে। শুধু তার জন্য যে তাকে নি:স্বার্থ ভালবেসে গেছে অনন্তলোকে। শুধু তার কারনেই আজো ফেরি করে চলেছে ফেরিওয়ালা। ফেরিওয়ালার জীবনে ব্যর্থতা সেটাই যেটা তার সত্যনন্দীর কামনার বিরুদ্ধে। ফেরিওয়ালা জ্ঞ্যন দক্ষতা শুন্য একজন পথের পথিক যেখানে সে বিশ্বাস খুজে ফিরেছে সেখানেই হায়েনা বাসা বেধেছে শুধু একটি ভাবনা তাকে কুরে কুরে খেয়ে তীলে তিলে শেষ করে দিয়েছে কি হবে তার সীমানা অতিক্রমের সন্ধিক্ষন? শব যাত্রা নাকি দাফন নাকি কাঠের বাক্সে সযত্নে বন্দী নতুবা অথর্ব দেহ খানি নাকি ছাই হয়ে উড়ে যাবে সত্যনন্দীর ভালবাসার এই পিঞ্জর। ফেরিওয়ালার পুজোর থালা শুধু নাকি সত্যনন্দীর পূজা অর্চনায় প্রস্তুত সর্বদা। একমাত্র সত্যনন্দী ছাড়া ফেরিওয়ালার আকাশ মুখ থবড়ে মিশে যায় কল্পলোকের সবুজ বনানীর সাথে। সে আকাশ ভেষে থাকে শুধু সত্যনন্দীর অদৃশ্য সুতোর টানে। তাই হয়ত ফেরিওয়ালা সত্যনন্দীর পুজো অর্চনায় আপোষহীন।

শব্দের সীমারেখা

dir="ltr">শব্দের গন্তব্য কোথায়? শব্দের গন্তব্য আসলে নিদৃষ্ট। শব্দ যেখানে উৎপন্ন হয় সেখানেই স্থীর থাকে অর্থাৎ একটি শব্দ যখন উৎপন্ন হয় তখন যতদুর পর্যন্ত শব্দটি শোনা যায় শব্দের যাত্রা ততদূর পর্যন্তই। অর্থাৎ ঐ সীমানার বাইরে শব্দ যেতে পারেনা। কিন্তু সেই শব্দ পরে আর আমরা কেন শুনতে পাইনা। কারণ হলো একই স্থানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শব্দ উৎপন্ন হয় এবং শব্দ গুলো সময়ের ব্যবধানে একটির উপর আর একটি পরতে পরতে সাজানো থাকে। ঠিক কলার গাছের আবরণ গুলো যেভাবে একটির ওপর আর একটি সাজানো থাকে। আমরা ইচ্ছা করলে পূর্বের কোন শব্দকে পূনরুদ্ধার করতে পারি যদি পূর্বের কৃত কোন শব্দের নমুনা আমরা সংরক্ষন করতে পারি এবং সেই নমুনার সাথে ম্যচিং করে আমরা পূর্বের উচ্চারিত শব্দ পুনরুদ্ধার করতে পারি। একই ভাবে আমরা অপরাধী শনাক্ত করতে পারি। অর্থাৎ একজন অপরাধী তার অপরাধ সংঘটনের স্থানে যে রুপ শব্দ করে বা শব্দ না করেও তার হার্টবীটের যে শব্দ সেখানে উৎপন্ন হয়েছিল তা সনাক্তের মাধ্যমে তার উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাবে। এবং অপরাধীককে সাজা দেওয়া সম্ভব হবে। এ কাজের জন্য প্রয়োজন পড়বে ভয়েস ম্যাচিং প্রোগ্রাম। যেটা নমুনার সাথে পূর্বের শব্দ ম্যাচ করবে। ন্যানোচিপ মাইক্রোফোন প্রয়োজন পড়বে যেটা অতি ক্ষূদ্রাতিক্ষুদ্র শব্দকে আইডেন্টিফাই করবে এবং ধারণ করবে। এবং নমূনার সাথে ম্যাচিং করবে। এটা সম্ভব হলে মহামনীষীদের বানীও হয়ত খুজে পাওয়া সম্ভব হবে এবং ঘটণা বা বক্তব্যের প্রেক্ষিত খুজে পাওয়া সম্ভব হবে।

ভিসা ফ্রী ৪১ দেশ

ভিসা ছাড়াই যে ৪১ দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা
বাংলাদেশের নাগরিকরা ভিসা ছাড়াই ৪১টি দেশে যেতে পারেন। যেখানে আগে যাওয়া যেত ৩৮ দেশে। অর্থাৎ এই দেশগুলোতে ভ্রমণ করতে কোনো ধরণের ভিসা লাগে না, কেবল পাসপোর্ট থাকলেই চলবে।
বিশ্বের ১০৪টি দেশের ওপর জরিপ চালিয়ে একটি মূল্যায়ন সূচক তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ‘দ্যা হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স’। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থার (আইএটিএ) ভ্রমণ তথ্যভাণ্ডারের সহযোগিতা নিয়ে প্রতিবছরের মতো এ সূচক তৈরি করেছে তারা। এতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
দ্য হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স বলছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকলে বিশ্বের ৪১টি দেশে ভিসা ছাড়াই প্রবেশ করা যাবে এই তালিকায়
এশিয়ার মধ্যে রয়েছে
ভুটান, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও পূর্ব তিমুর।
আফ্রিকার মধ্যে রয়েছে-
বেনিন, কেপ ভার্দ, কমোরো দ্বীপপুঞ্জ, জিবুতি, গাম্বিয়া, গিনি বিসাউ, কেনিয়া, লেসোথো, মাদাগাস্কার, মৌরিতানিয়া, মোজাম্বিক, রুয়ান্ডা, সিসিলি, সোমালিয়া, টোগো ও উগান্ডা।
আমেরিকার মধ্যে রয়েছে বলিভিয়া
ওশেনিয়া অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে-
কুক আইল্যান্ডস, ফিজি, মাইক্রোনেশিয়া, নিউই, সামাউ, ত্রিভালু ও ভানুয়াতু।
ক্যারিবীয় অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে-
বাহামা, বার্বাডোজ, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডস, ডোমিনিকা, গ্রেনাডা, হাইতি, জামাইকা, মন্টসেরাত, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট ভিনসেন্ট ও ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগো।
বুধবার (০৯ জানুয়ারি) দ্য হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্সের প্রকাশিত ওই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৭তম। সূচকে ভারতের অবস্থান ৭৯তম। আর পাকিস্তান রয়েছে ১০২-এ।
আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থার (আইএটিএ) ভ্রমণ তথ্যভাণ্ডারের সহযোগিতা নিয়ে প্রতিবছর হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স এ সূচক তৈরি করে। দেশভিত্তিক নম্বর (স্কোর) দেওয়া রয়েছে সূচকে। এ নম্বরটি হচ্ছে একটি দেশ আগে থেকে ভিসা ছাড়া বা আগমনী ভিসা (ভিসা অন অ্যারাইভাল) নিয়ে বিশ্বের কতটি দেশে যেতে পারেন তার ওপর নির্ভর করে।
১৯০ দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা নিয়ে তালিকার প্রথমে রয়েছে জাপানি পাসপোর্ট। পরের স্থানে রয়েছে যৌথভাবে সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ান পাসপোর্ট (ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার ১৮৯ দেশ)। তিন মাস পরপর প্রকাশিত সূচকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রথম স্থানটি দখল করে আছে একটি এশিয়ান দেশ।
২০১৭ সালে চীনের অবস্থান ৮৫তম থাকলেও এবছর তারা উঠে এসেছে ৬৯তম স্থানে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান করছে ষষ্ঠ স্থানে।
সূচকে সেরা পাঁচ- জাপান (১৯০ দেশ), সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া (১৮৯ দেশ), ফ্রান্স ও জার্মানি (১৮৮ দেশ), ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ইতালি ও সুইডেন (১৮৭ দেশ) এবং লুক্সেমবার্গ ও স্পেন (১৮৬ দেশ)।
সূচকে সবচেয়ে দুর্বল পাঁচ- আফগানিস্তান ও ইরাক (৩০ দেশ), সোমালিয়া ও সিরিয়া (৩২ দেশ), পাকিস্তান (৩৩ দেশ), ইয়েমেন (৩৭ দেশ) এবং ইরিত্রিয়া (৩৮ দেশ)।

Co2 Run to water

প্রতিদিন আমরা অসংখ্য ইনোভেশন দেখতে পাই। বা ইনোভেশন এর সুবিধা পর্যালোচনা করি। এটা ইনোভেশন এ পড়ে কিনা জানিনা তবে এটা জানি কার্বনডাইঅক্সাইড হয়ত আর আমাদের ক্ষতির কারণ হবেনা। এখন আমরা কার্বন ডাই অক্সাইড কেই পানিতে রুপান্তর করতে পারি এবং সেই পানি পরিশোধন করে আমরা ব্যবহারযোগ্য করতে পারি। এবং এটা অতি সহজ একটি প্রক্রিয়া যা শহর কে দুষনমূক্ত করতে পারে। আমাদেরকে রক্ষা করতে পারে বৈশ্বক উষ্ণতা থেকে। যে কাল ধোয়া আমাদের জন্য অভিশাপ সেই কালধোয়া আমাদের জন্য আশীর্বাদ হতে পারে।

জীবন বৃত্ত

ফেরিওয়ালা নিবেদিতঃ জীবন একটা বৃত্ত। অথচ এই বৃত্ত কে রুপ দেবার জন্য ছুড়ে দেওয়া হয়েছে অসংখ্য বিন্দু। এই বিন্দু গূলো যে যে ভাবে জুড়ে বা সাজিয়ে নেয় তার জীবন বৃত্ত তেমনই হয়। সৃষ্টি একটি বিজ্ঞান, এস্ট্রলোজি, সৃষ্টিসীমা বিজ্ঞান সবকিছুর উর্দ্ধে হলো মানুষের আত্মবিশ্বাস। এই আত্মবিশ্বাস এর ক্ষমতা বিধির বিধানকেও প্রভাবিত করারও ক্ষমতা প্রাপ্ত যদি সংশ্লিষ্ট তা প্রয়োগ করতে সমর্থ হন। সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টিকে সৃষ্টি করেছিলেন সরলরৈখিক। মানুষ তার কর্মগুনে সৃষ্টিকে বক্র করে ফেলেছে। সরলরৈখিক সৃষ্টি যখন সৃষ্টিকর্তার অবাধ্য হয়েছে তখন সৃষ্টিকর্তা শাস্তি স্বরুপ আবার নতুন সৃষ্টি পাঠিয়েছেন যার প্রাথমিক বিন্যাস সরলরৈখিক হলেও ভিন্ন সৃষ্টির কাছে তা বক্ররৈখিক হয়ে যায়। যদি সৃষ্টিগুলোকে বিন্দু ধরা হয় তবে অসংখ্য বিন্দুর মতো প্রতিটি সৃষ্টি এক এক টি বিন্দু। মানুষ পৃথিবীতে পরিক্রমনকালে বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন মানুষের সাথে মিলিত হয়। আর মানুষকে যদি বিন্দু ধরা হয় তবে তার যোগাযোগগুলো এক বিন্দুর সাথে আর এক বিন্দুর সংযোগ তৈরী করে। আর এই সংযোগ গুলো হয়ে থাকে একটি নিদৃষ্ট বয়স কাল পর্যন্ত এবং সেটা এক ভিন্ন জীবের আকৃতি তৈরি করে। আর যে জীবের আকৃতি তৈরি হয় মানুষের মূল্যায়ন বয়সে মানুষ সেই জীবের মত বৈশিষ্ট্য দ্বারা মূল্যায়িত হয়। আর একারণেই আমরা মানুষকে সংশ্লিষ্ট জীবের সাথে তুলনা করে গালি দিয়ে থাকি নিজের অজান্তেই। পৃথিবীতে কোন কিছুই এমনি এমনি ঘটেনা। প্রতিটি ঘটনা মানুষের বা ব্যক্তির জীবনমুখী একটি ঘটনা। একটি বিন্দুর আকৃতি কেমন? গোলাকার না চ্যপ্টা, লম্বা না খাটো? আসলে পদার্থ বিজ্ঞান অনুসারে বিন্দু যদি অনু হয় তবে বিন্দুর অসংখ্য পরমাণুও আছে। এবং প্রতিটি বিন্দুও এক একটি গোলাবৃত্ত। এবং প্রতিটি বিন্দুরই আবার নিজস্ব একটি আকৃতি আছে। যারা সঠিক বিন্দুতে সংযোগ সাধন করে একটা সঠিক বৃত্ত তৈরি করতে পারে তারা সফল বলে পরিগনিত হয়। আর সঠিক বৃত্ত তখনই তৈরী হয় যখন মানুষ সৃষ্টিকর্তার আনুগত্য করে শতভাগ ক্ষেত্রে।

সুস্থতায় অতীত

বর্তমান সময়ে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবন যাপন। অতীত কে কুসংস্কার আখ্যায়িত করে মানুষের এই বদলে যাওয়া চরিত্রে হারিয়ে যাচ্ছে অতীতের শিক্ষা। অতীতে নাকি অশিক্ষিত লোকের সংখ্যা নাকি বেশি ছিল কিন্তু জ্ঞানী লোকের সংখ্যা কি কম ছিল? না মোটেও তা নয়। বরং অতীত জনসংখ্যা যে জ্ঞান লালন করত তা বর্তমান টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার স্বরূপ। যা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। একজন শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার সাথে সাথে তার মুখে মধু দেওয়া হতো সেটা কি অজ্ঞতা ছিল? না মোটেও তা নয় শিশুর শরীরে গ্লুকোজ এর মাত্রা সঠিক রাখার জন্য মধু এক কার্যকর উপাদান। খাটি মধু সকল রোগের মহাঔষধ। এখনতো শিশু ভূমিষ্ঠ করতে সিজার করা হয় সিজার শেষে শিশুর মুখে মধু না দিয়ে তার রক্তের গ্লুকোজ এর পরিমান মাত্রা জানতে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর শরীর থেকে প্রায় এক সিরিঞ্জ পরিমাণ রক্ত নিয়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষার নামে শিশুর খুশিতে আপ্লুত পরিবারের কাছ থেকে বাড়তি কিছু টাকা খসানোর ব্যবসাতে পরিণত হয়ে গেছে বাণিজ্যিক পৃথিবীতে। অথচ সিজার ছাড়াও গর্ভবতীকে পানিতে রেখে বাচ্চা প্রসব করানোর সহজ পদ্ধতি জানার পরেও শুধু বিজ্ঞাপনজনিত অনাকাঙ্ক্ষিত ভয়ে ধাত্রীরাও ডেলিভারি করাতে ভয় পান ফলে সবাই ছোটে ক্লিনিকে। অথচ সরকারি হাসপাতালে সিজার করতে চায়না বলে অনেকেই সেই পথ মাড়াতে চাননা। অথচ একটি সিজার করা শিশু এবং নর্মালে জন্ম হওয়া শিশুর চেয়ে বেশি অসুস্থ থাকে। আমরা এক অসুস্থ বানিজ্যের প্রতিযোগিতার স্বীকার হচ্ছি প্রতিনিয়ত। এ থেকে পরিত্রান পেতে হবে আমাদের শেকড়ে ফিরতে হবে।

শিক্ষা কার জন্য?

ফেরিওয়ালা একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কার জন্য হওয়া উচিৎ? শিশুর জন্য। আদৌও কি শিক্ষা ব্যবস্থাগুলো শিশুকেন্দ্রিক? না রাষ্ট্র কেন্দ্রিক? আদৌ কি রাষ্ট্র গুলো শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়তে পেরেছে? না পারেনি। তবে রাষ্ট্র হয়ত সেই পথেই এগোতে চায় কিন্তু প্রতিবন্ধকতা আছে আর এই প্রতিবন্ধকতা তৈরী করেন রাষ্ট্র পরিচালনাকারী সংগঠন ও কতিপয় শিক্ষকের মানষিকতা। আমি আমার শিশুদের মনোভাব যাচাইয়ের চেষ্টা করি জানতে চেষ্টা করি কার কি ইচ্ছা হয়ত ইচ্ছা পূরণের সাধ্য আমার নেই অনুপ্রেরণায় সার। তবুও ইচ্ছা হয় অন্তত তাকে সহযোগিতা করি। কিন্তু পারিপার্শ্বিকতা সবসময় সহায়ক হয়ে উঠেনা। আমি মনে কঅরি একজন শিশুর পরিচ্ছদ তার ভবিষ্যৎ জীবনকে প্রভাবিত করবে আমার যে সন্তান এস্ট্রনট হতে চায় তাকে কেন আমি স্কুল ড্রেস পরতে বাধ্য করব সে আসুকনা এস্ট্রনট সেজে। আমার যে শিশু ডাক্তার হতে চায় সে যদি ডাক্তারী পোশাকে স্টেথিস্কোপ কাধে ঝুলিয়ে বিদ্যালয়ে আসে সমস্যা কোথায়?

মহস্থানগড় প্রাচীন স্থাপত্যকলা

ফেরিওয়ালা সংগৃহীত
উত্তরবঙ্গের ইতিহাস সমৃদ্ধ জেলা বগুড়া। বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক জায়গা এই বগুড়া জেলাতেই অবস্থিত। যা মহাস্থানগড় নামে পরিচিত । বগুড়া শহর আর শহরের নিকটে অবস্থিত মহাস্থানগড় সহ বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান এই জেলাতেই রয়েছে । বগুড়াকে  উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বলা হয়। জেলা শিল্প ও ব্যবসাবাণিজ্যের জন্যেও বেশ বিখ্যাত। শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত মোহাম্মদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম। বগুড়া শহরের সাতমাথা মোড়ের নিকটে অবস্থিত এই জাদুঘরটি মূলত বগুড়ার নবাববাড়ী। এই নবাব পরিবারের সদস্য মোহাম্মদ আলী ছিলেন ১৯৫৩-১৯৫৫ সাল পর্যন্ত অবিভক্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। নবাব পরিবারের এই প্রাসাদটি ১৯৯৮ সাল থেকে জাদুঘর হিসেবে চালু রয়েছে। জাদুঘরে নবাব পরিবারের ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রাচীন দ্রব্যসামগ্রী দিয়ে নবাব পরিবারের তৎকালীন জীবনধারা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, অনেকটা আহসান মঞ্জিলের কায়দায়, যদিও রক্ষণাবেক্ষণের অবস্থা বেশ খারাপ। প্রাসাদ কমপ্লেক্সের ভেতরকার অংশে একটি শিশুপার্কও আছে। জাদুঘরের নিকটে রয়েছে একটি ঐতিহ্যবাহী পুরনো হল, নাম থমসন হল। এটি বগুড়া জিলা স্কুলের সীমানার ভেতরে অবস্থিত। ১৮৮২ সালে তৎকালীন লেফটেন্যান্ট গভর্ণর স্যার রিভার থমসন একটি থিয়েটার হল নির্মাণ করেছিলেন, পরবর্তীতে এটি জিলা স্কুলের পাঠাগারে পরিণত হয়। শহরের সাতমাথা মোড়ে দাঁড়িয়েও হলটি দেখতে পাওয়া যায়। বগুড়ায় আছে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম ‘শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম’, এখানেও একটা ঢুঁ মারতে পারেন। স্টেডিয়াম গেটের সাথেই আছে বগুড়া ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশুপার্ক। স্টেডিয়ামের কাছেই ১০ মিনিটের রিকশার দূরত্বে আছে ‘সরকারি আযিযুল হক কলেজ’। উত্তরবঙ্গের অন্যতম বিদ্যাপীঠ এই ক্যাম্পাস। মহাস্থানগড় বগুড়ার অন্যতম আকর্ষণীয় প্রত্নতত্ত্ব স্থল হলেও আরো কিছু জায়গা রয়েছে যেমন  ‘খেরুয়া মসজিদ’। বগুড়া শহর থেকে ২২ কি.মি. দূরে শেরপুর উপজেলায় এটি অবস্থিত। শহরের সাতমাথা বাসস্ট্যান্ড থেকে শেরপুরগামী বাসে উঠলে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘন্টার ভেতর যাওয়া যায়।  শেরপুরে নেমে ভ্যান বা রিকশায় ১০ মিনিটে পৌঁছে যাবেন সুলতানী আমলে তৈরী ৪৩৫ বছরের  পুরনো খেরুয়া মসজিদে। চারশ’ বছরের পুরনো হলেও মসজিদটি বেশ ভালো অবস্থায়ই আছে। সামনে সবুজ ঘাসে ঢাকা মাঠ, বেশ কিছু গাছপালাও আছে চারপাশে। মসজিদের গায়ে রয়েছে চমৎকার এক শিলালিপি। শিলালিপি থেকে জানা যায়, ১৫৮২ সালে জনৈক মির্জা মুরাদ খান কাকশাল এটি নির্মাণ করেন। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি মোগল ও সুলতানি স্থাপত্যরীতির মিশ্রণে তৈরী। মসজিদের সামনের অংশে রয়েছে কিছু ফুল-লতা-পাতার নকশা, সাধারণ কিন্তু নান্দনিক নকশায় তৈরী মসজিদটি দেখতে অসাধারন। মহাস্থানগড় ভ্রমণ করতে আপনাকে  হাতে পর্যাপ্ত সময়  রাখতে হবে। ছড়ানো-ছিটানো বিভিন্ন প্রত্নস্থল ঘুরে দেখতে অনেক সময়  লেগে যাবে। শহরের তিনমাথা বাসস্ট্যান্ড থেকে মহাস্থানগড়গামী বাসে পৌঁছতে সময় লাগবে মাত্র আধাঘন্টা। ‘মহাস্থান বাজার’ নামক স্থানে নেমে একটি ভ্যান নিয়ে ৫ মিনিটেই পৌঁছে যাবেন মহাস্থানগড়ে। জায়গাগুলো ধারাবাহিকভাবে সময় নিয়ে দেখা দরকা।  মহাস্থানগড় ঘোরার আগে ম্যাপে সব অবস্থানগুলো আগে দেখে নিলে ভাল ধারণা পাবেন। ইতিহাসটাও জেনে নেয়া যাবে, নতুবা ঘুরে দেখার পরও জায়গাটা অচেনা থেকে যাবে। মহাস্থানগড় এখনো পর্যন্ত এ দেশে আবিষ্কৃত সবচেয়ে প্রাচীন পুরাকীর্তি, যেটা তৈরী হয়েছিল যিশুখ্রিস্টের জন্মেরও চারশ বছর পূর্বে অর্থাৎ প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে। তখন এটি পরিচিত ছিল ‘পুন্ড্রবর্ধন’ বা ‘পুন্ড্রনগর’ নামে। এটি তৎকালীন প্রাচীন বাংলার রাজধানী। প্রাচীর বেষ্টিত দুর্গ নগরটি উপর থেকে দেখতে আয়তকার। প্রাচীরের ভেতরে ও বাইরে রয়েছিল বিভিন্ন স্থাপনা, এখন যেগুলোর ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাওয়া যায়। ২০১৬ সালে একে সার্কের ‘ সাংস্কৃতিক  রাজধানী  হিসেবে ঘোষিত হয়।
নগরীতে ছিল বেশ কিছু বৌদ্ধমঠ, মঠ গুলোতে সুদূর তিব্বত ও চীন থেকে ভিক্ষুরা আসতেন পড়াশোনা করতে। এখান থেকে দীক্ষা নিয়ে ভিক্ষুরা বেরিয়ে পড়তেন দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বৌদ্ধ ধর্মশিক্ষা  বিস্তার  করাই ছিল মুল লক্ষ্য। নগরীর সীমানা প্রাচীরটি প্রায় ৩ কি.মি. এর মতো দীর্ঘ, পুরোটা হেঁটে শেষ করা মুশকিল। এছাড়াও প্রত্নস্থলগুলো ছড়ানো-ছিটানো হওয়ায় একটি ক্রম ধরে দেখা শুরু করা ভাল। মহাস্থান বাজারে নেমেই হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (র) এর মাজার দিয়ে, বাজারে সাথেই লাগোয়া এটি। চতুর্দশ শতাব্দীতে তিনি পুন্ড্রনগরে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে  আসেন। এ সময় তৎকালীন রাজা পরশুরামের সাথে ধর্মপ্রচার নিয়ে বিরোধে তার সাথে যুদ্ধ বাঁধে। যুদ্ধে পরশুরাম পরাজিত হন। তিনি তার সাথীদের সাথে মাছ আকৃতির নৌকায় করে এ অঞ্চলে পৌঁছান, এ কারণে তাকে ‘মাহী সওয়ার’ বা ‘মাছের পিঠে করে আগমনকারী’ বলা হয় ।এরপর মাজার থেকে মহাস্থানগড়ের দিকে মিনিট পাঁচেক হেঁটে ডাকবাংলো সংলগ্ন ‘খোদার পাথর ভিটা’তে যেতে পারেন। এটি মূলত একটি বৌদ্ধ মন্দির ছিল। এখানে একটি বেশ বড় আকারের আয়তাকার মসৃণ পাথর আছে। পাথরটি রাজা পরশুরাম বলী দেয়ার কাজে ব্যবহার করতেন। এখনো হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সিঁদুর ও দুধ ঢেলে ভক্তি করে থাকেন। খোদার পাথর ভিটার ঠিক পাশেই আছে ‘মানকালীর কুন্ড’। ফসলি জমির আইল দিয়ে অথবা ঘরবাড়ি সংলগ্ন মেঠোপথে মিনিট পাঁচেক হাঁটলে সামনে পড়বে এটি। অবাক করার বিষয় হলো, এটি একটি মসজিদের ধ্বংসবাশেষ, যেটি সুলতানি আমলে নির্মিত। মানকালীর কুন্ডের ঠিক পাশেই খেয়াল করলে দেখতে পাবেন ফসলি জমির গা ঘেঁষে শুরু হয়েছে মহাস্থানগড়ের সীমানা প্রাচীর। প্রাচীরের উপর দিয়ে হাঁটতে বেশ দারুণ লাগবে, মনে হবে যেন চীনের মহাপ্রাচীরের উপর দিয়ে হাঁটছি! মিনিট দশেক হাঁটলে সামনে পড়বে দুর্গনগরী মহাস্থানে প্রবেশের প্রাচীন এক ফটক।ফটক পেরিয়ে আবার প্রাচীরে উঠলে দেখতে পাওয়া যায়  ‘রাজা পরশুরামের প্রাসাদ’। রাজা পরশুরাম ছিলেন এখানকার শেষ রাজা যাকে শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী পরাজিত করেছিলেন। বিভিন্ন সময়ে খননের মাধ্যমে এখানে প্রাসাদের প্রবেশদ্বার, প্রহরী কক্ষ, ৪টি অন্দরমহল ইত্যাদির ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রাসাদের সামনে আছে ‘জিয়ৎ কুন্ড’ নামে একটি কূপ। কথিত আছে, রাজার পরশুরাম শাহ সুলতান মাহমুদ বলখীর সাথে যুদ্ধের সময় এই কূপের পানির সাহায্যে তার বাহিনীর মৃত সৈনিকদেরকে জীবিত করতে পারতেন। শাহ সুলতান কূপটির পানির জীবন দান করার ক্ষমতার কথা জানতে পেরে একটি চিলের সাহায্যে এক টুকরো মাংস কূপের পানিতে নিক্ষেপ করলে কূপটির অলৌকিক ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। যদিও এই কাহিনীর কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি। এরপর ভালো হয় আপনি যদি একটু আগে দুর্গের যে ফটকটি পার হয়েছিলেন, সেটা দিয়ে প্রধান রাস্তায় গিয়ে ভ্যানে করে মহাস্থানগড়ের মূল গেটে যান। দূর্গের প্রাচীরের উপর দিয়ে হেঁটেও আপনি মূল গেটে পৌঁছাতে পারবেন, কিন্তু সেটা কিছুটা সময় সাপেক্ষ এবং পরিশ্রমসাধ্য মহাস্থানগড়ের মূল ফটকে গড়ে ওঠার জন্যে তৈরী করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন কাঠের সিঁড়ি। সিঁড়ি দিয়ে উঠে কিছু দূরে দেখতে পাওয়া যায় ‘বৈরাগীর ভিটা’ নামক একটি ঢিবি। রাস্তার বিপরীতে করতোয়া নদীর গা ঘেঁষে আছে ‘গোবিন্দ ভিটা’, যেটা ছিল একটি মন্দির। গোবিন্দ ভিটা দেখা শেষে মহাস্থানগড় জাদুঘর পরিদর্শনে ঢুকে পড়ুন। জাদুঘরটি বেশ চমৎকার।
গোকুল মেধ বা বেহুলার বাসরঘর, ভাসু বিহার বা নরপতির ধাম ও তোতারাম পন্ডিতের বাড়ি।এই জায়গাগুলো  মহাস্থানগড় থেকে গড়ে প্রায় ৫/৬ কি.মি. দূরত্বে। ভাসু বিহার এবং বিহার ধাপ উভয়ই কিছু আয়তাকার বৌদ্ধ বিহার ও মন্দিরের সমন্বয়ে গঠিত। প্রতিটি বিহারে ভিক্ষুদের যথাক্রমে ২৬টি ও ৩৭টি কক্ষ আছে। ভাসু বিহার থেকে প্রায় ৮০০টি প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে, যার মধ্যে আছে ক্ষুদ্র মূর্তি, পোড়ামাটির ফলক, মূল্যবান পাথরের গুটিকা, সীলমোহর ইত্যাদি। এগুলোর অনেক কিছুই মহাস্থানগড় জাদুঘরে রাখা আছে। গোকুল মেধ মূলত একটি বৌদ্ধ মঠ হলেও এর অবকাঠামো বেশ বিচিত্র ও জটিল। বলা হয়ে থাকে, এখানে বেহুলার বাসরঘর হয়েছিলো। মহাস্থানগড় বাসস্ট্যান্ড থেকে ২ কি.মি. দূরে গোকুল গ্রামে এটি অবস্থিত। এখানে ত্রিকোণ বিশিষ্ট ১৭২টি এলোমেলো কক্ষ আছে, যা বেশ দুর্বোধ্য। স্তূপটির উপরে রয়েছে একটি কূপ, একসময় কূপটি ৮ ফুট গভীর ছিল। বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্রে এটিকে মঠ বলা হলেও কোনো কোনো ঐতিহাসিক গ্রন্থে এটিকে পর্যবেক্ষণাগার বলা হয়েছে, যার কাজ ছিল বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে পুন্ড্রনগরকে রক্ষা করা। আজও এই মহাস্থানগড় প্রাচীন বাংলার শৌর্য বীর্যের স্বাক্ষী হয়ে আছে।      

নির্মুল কতটা সহজ

বাংলাদেশের মাদক সমস্যা এত প্রকট যে এর ভুক্তভোগী প্রায় সকলেই। কেউ বা প্রত্যক্ষ অথবা কেউ পরোক্ষ। এর জন্য আমরা কখোনো চিরুনী অভিযান কখোনো ভ্রাম্...

PICTURE OR....

চিত্র বা ছবি কি? আসলে চিত্র বা ছবি হলো দর্শকের সম্মোহিত হয়ে পড়া। যখন কোন দর্শকের সামনে চিত্র বা ছবি উপস্থাপন করা হয় তখন সংশ্লিষ্ট দর্শক সম্মোহিত হয়ে পড়ে, এবং সম্মোহিত অবস্থায় চেনা বা স্মৃতিতে থাকা তথ্যের সাথে মিল খুজে দেখে এই সার্চিং প্রক্রিয়াটি ঘটে ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যে যা কম্পিউটার এর চাইতেও দ্রুত সম্পন্ন করে। যদি স্মৃতিতে রক্ষিত তথ্যের সাথে মিলে যায় তবে দর্শক তা চিনতে পারে না থাকলে পারেনা। সম্পূর্ন প্রক্রিয়াতে শিল্পী যে চিত্র উপস্থাপন করেছেন সেটা হলো শিল্পীর সম্মোহন করার ক্ষমতা। এ কারনেই কোন কোন ছবি অবিকল চেহার সাথে মেলে কোনটা মেলেনা। সবাই আকতে পারে কিন্তু সবার অংকনে সম্মোহনী ক্ষমতাটা প্রকাশ হয়না ফলে আমরা মনে করি সংশ্লিষ্ট অংকন কারীর ছবিটি ভাল হয়নি বা ভাল হয়েছে।

মাদক নির্মুল কতটা সহজ

বাংলাদেশের মাদক সমস্যা এত প্রকট যে এর ভুক্তভোগী প্রায় সকলেই। কেউ বা প্রত্যক্ষ অথবা কেউ পরোক্ষ। এর জন্য আমরা কখোনো চিরুনী অভিযান কখোনো ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে দন্ড দিয়ে যুবসমাজ কে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করছি। এর ফলাফল কতটা সুখকর আমাদের জন্য? অথচ মাদক নিরাময়ের সহজ সমাধানটা এই ভূখণ্ডেই আছে অথচ হাইব্রিড এর উৎপাদন এতটাই বেড়ে গেছে যে প্রকৃত দেশি উৎপাদন আজ শুন্যের কোঠায়। অথচ এগুলোই পারত মাদক কে নির্মূল করতে। দেশি কাগজি জাতের লেবুর ভেষজ গুন হচ্ছে শরীরের রক্তে মিশে গিয়ে। মাদক গ্রহণে উৎসাহ প্রদানকারী স্নায়ু গুলোকে নিস্তেজ করে দিয়ে রক্ত পরিশোধন করে সুস্থ জীবনের পথে পরিচালিত করে। অথচ হাইব্রিড প্রজাতির লেবুগুলোর সেই গুনাগুণ সীমিত। তাই সমাজ কে মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে সমাজ জাতি ও দেশ কে রক্ষা করতে দেশি প্রজাতির কাগজি লেবুর কোন বিকল্প নেই। আসুন দেশি প্রজাতির কাগজি লেবুর উৎপাদন বৃদ্ধি করে সকাল বিকাল মাদকাসক্ত সন্তানকে তার রস পান করায় এবং সমাজ কে মাদক মুক্ত করি।

একজন মতিউর

ফেরিওয়ালা নিবেদিত
ছবিতে যে ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে তার নাম মো: মতিউর রহমান পেশায় তিনি মৎস্য ব্যবসায়ী। হয়ত অনেকেই চেনেন। শিমুলিয়া গ্রাম নিবাসী এই ব্যক্তি শুধুই মৎস্য ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত তা নয় সে অত্যান্ত সুপরিচিত ও জনপ্রিয় তার সৌজন্যবোধ সততা আর মিষ্টি ব্যবহারের কারণে। পারিবারিক দারিদ্রতার কারণে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়েন প্রাথমিকের গন্ডিতেই। হয়ত ঝরে পড়ার পরে কেউ তার ঝরে পড়া রোধ করতে পাশে এসে দাড়ায়নি। কোন এক শুভাকাংখির সহায়তায় ছোট বেলাতেই সংসারের দায়িত্ব কাধে নিয়ে ছোট ভাইদের মানুষ করতে শুরু  হয় তার ব্যবসায়ী জীবন। আড়ত থেকে বা অন্য কোন বড় পুকুর ব্যবসায়ীদের থেকে মাছ কিনে বিক্রি করে বেড়াতেন বিভিন্ন হাট বাজারে। একসময় ধনী না হলেও স্বচ্ছলতা আসে সংসারে তার অক্লান্ত পরিশ্রম আর সততার গুনে। পরিচিতি বাড়তে থাকে কিন্তু মন থেকে মুছতে পারেননি ঝরে পড়ার যন্ত্রনা। কোন এক শুভানুধ্যায়ীর সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের অব্যবহৃত পুরাতন বই সংগ্রহ করে একা একাই চেষ্টা করেন লেখাপড়া শিখতে। হয়ত অনেক দেরি হয়ে গেছে কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি তার ইচ্ছা। ব্যবসার কাজ কর্ম আদায় পরিশোধ পরবর্তী দিনের জন্য মূলধন সংগ্রহ এই সকল কাজ করে বাড়ি ফিরত অনেক রাত হয়ে যেত ১২ টা বা১২:৩০ বেজে যেত। আবার ভোরে উঠে আড়তে বা পুকুর পাড়ে যেতে হবে মাছ কিনতে। মাঝে খাওয়া দাওয়া বিশ্রামের জন্য মাত্র চার ঘন্টা সময়। তবুও থেমে থাকেনি তার ইচ্ছা এই সময়টুকুর মধ্যেই আবার একটু লেখা পড়াও করতে হবে। অবশেষ এ বছর শেষ হলো তার আনুষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন। স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে সে এখনো ফুটপাথে মাছের ব্যবসা করছে। তার সরকারি চাকুরীতে আবেদন করার বয়স সীমা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে। সে ফুটপাথে ব্যবসা করতে পছন্দ করে কিন্তু কারো দাসত্ব করা পছন্দ নয় তার তাই চাকুরীর চেষ্টা করেনা। এম,এ পাশ করা এই মানুষটি ফুটপাথে ব্যবসা করে দারিদ্র অভাবের সাথে লড়াই করলেও কখনো অবৈধ উপার্জনের পথে পা বাড়ান নি। ধণী হতে চাননা তিনি তবে তার স্বচ্ছলতাটুকু ধরে রাখতে চান। তার অদম্য লড়াইয়ে ক্ষুদা দারিদ্র্য অভাব আজ পরাজিত। হয়ত এমন হাজার হাজার মতিউর আমাদের সমাজে মিশে আছে যাদের কথা আমরা জানিনা কখনো জানতে চেষ্টাও করিনা। আমরাও হয়ত শিক্ষিত কিন্তু মতিউর রহমানের মত সুশিক্ষিত নয়। তাই মতিউরেরা হার মানতে জানেনা অথচ আমরা হেরে যায় পার্থিব ধনের লোভে। বিলিয়ে দেয় নিজেকে দাসত্বের শৃংখলে।

ফেরিওয়ালা: ধুমপান বন্ধ করা সময়ের দাবী

 ধুমপান বিষপান। বাংলাদেশের সকল তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর উপর এটেম টু মার্ডার এর কেস করা উচিৎ। কারণ তারা প্রকাশ্য দিবালোকে ম...

পথ ভুলে যাই।

চলার পথে চলতে চলতে আমরা ভুলেই গেছি কোন পথে কোন গন্তব্যের লক্ষ্যে চলছি নাকি হাজার পথের হাতছানি দিক ভুলিয়ে দিয়েছে। যে পথেই চলি কিছুদিন পর সেটাকেই ভুল মনে হয়। আবার নতুন করে যাত্রা শুরু আবার পথ ভোলা। যদি সকল বিনিয়োগ সকল সামর্থ্য শুধু যাত্রার শুরুতেই শেষ হয়ে যায় তবে গন্তব্যে পৌছাব কি করে আমরা? সৎ হওয়া যত সহজ সৎ থাকাটা তত সহজ নয়। কিন্তু সৎ জীবন যাপনে যে মানসিক প্রশান্তি তা সৎ মানুষ ছাড়া আর কেউ বোঝেনা। আমার চলার পথ মসৃণ কখোনোই ছিলনা সকল সময় দু:সময় দু:সহ যন্ত্রণায় পার করতে হয়েছে। স্বপ্ন পূরনে একমাত্র ভরষা মহান সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কেউ সাথী ছিলনা। যাদের পাশে থাকার কথা তারা নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে প্রমাণ করেছে কেউ কারো নয়। কতটা ব্যার্থতা বুকে নিয়ে একজন মানুষ বেচে থাকে তা শুধুমাত্র ব্যার্থ হয়ে বেচে থাকা মানুষেরাই জানে। কেউ স্বতঃফুর্ত ভাবে পাশে এসে হাত বাড়ায়নি। মুহুর্মুহ অবহেলা অবিশ্বাস অকৃতজ্ঞতা আর মানসিক যন্ত্রণায় ঝঞ্জার পতে উড়ে গেছি। আর্তনাদ এর হাহাকার কারো কর্ণকুহরে পৌঁছায়নি। আত্মহনন ছাড়া কোন বিকল্প ভাববার সুযোগ হয়নি। তবুও হেরে যেতে চাইনি। কিন্তু যখন পারিপার্শ্বিকতা হারিয়ে দিতে চায় তখন কে সেই পরাজয় ঠেকাতে পারে? পারে শুধু নি:স্বার্থ আপনজন। যে ভূবনে পিতা স্বার্থ ছাড়া সন্তান জন্ম দেয়না, মাতা স্বার্থ গর্ভধারণ করেনা, সৃষ্টিকর্তা স্বার্থছাড়া সৃষ্টি করেনা সেখানে নিঃস্বার্থ আপনজন কোথায় পাব। যাদের কে চিরজীবন এর জন্য আপন করে নেবার প্রত্যায় ব্যক্ত ছিল তারাও একটি নির্দৃষ্ট সময় শেষে বুঝিয়ে দিয়েছে আমি অপ্রয়োজনীয় সামাজিক অংশ, স্বপ্নে যার সূচণা স্বপ্নভংগে তার পরিসমাপ্তি। আজ আর নিজের চোখকে বিশ্বাস করিনা কারণ সে সুন্দরের পুজারী কানকে বিশ্বাস করতে পারিনা কারণ তারা শুধু আমি আমার শুনতে চায়, হাতকে বিশ্বাস করতে পারিনা কারন সে সঠিক সংগীকে আগলে রাখতে পারেনা। মন কে আর বিশ্বাস করিনা কারন আবেগাপ্লুত হয়ে সে ভাল মন্দের ব্যবধান করতে পারেনা, পা দুটোকে আর বিশ্বাস করিনা কারণ সে সঠিক পথ খুজে চলতে পারেনা, এই দেহকে আর বিশ্বাস করতে পারিনা কারণ সে ভবের মমতা ছাড়তে চায়না। আজ বিশ্বাস নেই সাহস নেই সামর্থ্য নেই। সব চেয়ে বড় কথা নিজেই নিজের হতে পারিনি। তাই অন্যের দোষ নেই সবাই নির্দোষ

বেকারত্ব নাকি বোকারত্ব

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ এখন দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ। উন্নয়নশীলতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ রাজনৈতিক স্থিরতা এবং দীর্ঘমেয়াদী সরকার তথা দীর্ঘস্থায়ী সরকার। যদিও দীর্ঘস্থায়ী সরকারকে কেউ কেউ সৈরাচার বা স্বৈরাচারী সরকার বলতে উদগ্রীব। তথাপি দীর্ঘমেয়াদী সরকারের সুফল জাতি ভোগ করছে। যদিও কেউ কেউ বলতে চাইছে ব্যপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়নি বা বেকারত্ব কমেনি আসলেও কি তাই? না আসলেও তাইনা আমরা মানসিক ভাবে দৈন্য। আমরা পেশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নই। উপরন্ত আমরা আত্মকেন্দ্রিক। কাজের চেয়ে মজুরীর প্রতি আমাদের আগ্রহ বেশি ফলে বেশি মজুরী দিতে গিয়ে পর্যাপ্ত কর্মী নিয়োগ সম্ভব হচ্ছেনা। তাছাড়া আমরা সব কাজ করতে প্রস্তুত নই কিছু কাজকে ছোট মনেকরি। যদি কর্মসংস্থানের চিন্তা মাথায় থাকত তবে যে কোন কাজ করেই কর্মসংস্থান দূর করা যায়। একজন কৃষিতে স্নাতক স্নাতোকোত্তর শেষ করে কৃষির প্রতি আগ্রহী না হয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের গোলামী করতে প্রস্তুত হয় কিন্তু কৃষিতে স্বনির্ভর হতে প্রস্তুত হয়না। এই কারনে বেকারত্ব দূর হয়না। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা ছাত্র ইনোভেশনে মনোযোগী না হয়ে অন্যের ইনোভেটিভ আইডিয়ার গোলামী করতে চায়। মানসিকতা এমন হলে কি বেকারত্ব দূর করা সম্ভব? কখনই না।  

ভাল শিক্ষক

একজন শিক্ষককে সবার আগে শিক্ষার্থী হওয়া জরুরী। অনেকে মনে করেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশিক্ষণ  এমন কেন? আসলে একজন শিক্ষক যদি ভাল শিক্ষার্থী হতে না পারে তবে তিনি কখনো ভাল শিক্ষক হতে পারবেননা। এখন প্রশ্ন হলো ভালো শিক্ষক বলতে  কি বোঝায়? আসলে ভাল শিক্ষক হতে হলে প্রথমত আপনাকে শিশু হতে হবে। শিশুর মানষিকতা বুঝতে হবে। শিশু যদি আপনাকে আপন ভাবতে না পারে তবে কখনো আপনি ভাল শিক্ষক হতে পারবেননা। গোমড়া মুখো মানুষের কাছে শিশুদের কিছু পাওয়ার থাকেনা। একজন গোমড়া মুখো মানুষ শিশুকে যত ভাল কথায় বলুক সেটা তার কাছে নিমের রস মনে হবে। শিশু চায় শিক্ষক আমাকে বুঝুক আমার বন্ধুবর হোক।  একজন ভাল শিক্ষক শিশুর কাছ থেকে শেখে কিন্তু শিশুকে শেখানোর চেষ্টা করেনা শুধু উৎসাহ প্রদান করে। আর এই উৎসাহ শিশুর ভাববার পরিধি বাড়ায় এবং শেখার প্রতি আগ্রহী করে তোলে। একজন ভাল শিক্ষকের কাজ শিশুকে আগ্রহী করে তোলা।  কিন্তু শিক্ষক শেখাতে চেষ্টা করে আর এইখানেই সমস্যা শুরু হয়। কেউ কারো কাছ থেকে কিছু শিখতে চায়না কিন্তু যেটা তার প্রয়োজন সেটা কিন্তু ঠিকই অন্যকারো কাছে হোক বা বার বার চেষ্টা করে হোক সে ঠিকই শিখে নিবে। তাই শিশুকে শেখানোর দরকার নেই শুধু শেখার প্রয়োজনটা অনুধাবন করাতে পারলেই হলো বাকি কাজ সে এমনিতেই করে ফেলবে। শিক্ষকের বড় সমস্যা হলো তিনি মনে করেন তিনি যত তাড়াতাড়ি অনুধাবন করতে পারলেন শিশুও তাই পারবে কিন্তু তা নয়। শিশুর সময় লাগবে তাই তাকে চেষ্টা করার পর্যাপ্ত সুযোগ দিতে হবে। প্রশ্ন করেই উত্তর প্রত্যাশা করা যাবেনা। তাকে  প্রশ্ন বোঝার পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। তার মাথায় চিন্তা করার সুযোগ দিতে হবে। মনে রাখতে হবে যত সুযোগ বেশি দিবেন তত ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাবে। একজন ভাল শিক্ষক সব সময় অনুপ্রাণিত করবেন প্রয়োজন অনুধাবন করাবেন প্রাচীনকালে শেখার জন্য শিশুদেরকে গুরুগৃহে পাঠানো হতো। কারণ গুরুর গৃহে থাকার ফলে শিশুর মানষিকতা যেমন গুরুরা বুঝতে পারতেন ঠিক তেমনি শিশুরাও গুরুকে অতি আপনজন ভাবত এবং নিজের ইচ্ছা অনিচ্ছা পছন্দ অপছন্দ স্বাচ্ছন্দ্যএ বলতে পারত। এবং যেহেতু সবসময় তারা গুরুর কাছাকাছি থাকত তাই গুরুরা তার শিষ্যকে প্রয়োজনীয় চ্যালেঞ্জ প্রদান করতে পারতেন। এবং শিশুরা সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে করতে নিজেদের জ্ঞ্যন শিক্ষা দক্ষতা বাড়াতে পারতো। এবং যেটা অর্জন করতে জীবনের কোন সময়েই তা ভুলতনা বরং দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগাত ফলে তাদের শিখন টেকসই হতো।